শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
উৎকণ্ঠা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে

শঙ্কা ৬০ শতাংশ কেন্দ্র নিয়েই

সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট থেকে

গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীদের মহড়া ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এমনিতেই নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরপর বুধবার রাতে নগরীর দক্ষিণ সুরমায় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা পুণ্যভূমি সিলেটে নির্বাচনী উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ভোটের দিন বড় সহিংসতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না জঙ্গি হামলার শঙ্কাও। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে সব প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। মোট ভোট কেন্দ্রের ৬০ শতাংশ (১৩৪টির মধ্যে ৮০টি) কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা  রক্ষাকারী বাহিনী। এসব কেন্দ্রে বিশেষ নজর থাকবে বলেও বলা হয়েছে। অন্যদিকে আজ রাত ১২টার পর নগরীতে বহিরাগতদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সিসিক এলাকার ভোটার নন এমন রাজনৈতিক নেতাসহ সব বহিরাগতকে সিলেট ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় থেকে।

স্থানীয়রা জানান, সিলেটে মূলত গত ১৫ জুলাই থেকে নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হতে থাকে। ওইদিন আম্বরখানায় যুবলীগ ও শিবির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েকবার নগরীতে মহড়া দেয় শিবির কর্মীরা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ৩৪ জন ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনার দুই মামলায় বিএনপির ১০০ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি প্রার্থী আরিফের অনেক নেতা-কর্মীই অনেকটা আত্মগোপনে রয়েছে। সিসিক নির্বাচনে জঙ্গি তৎপরতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী যাতে অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। গত ১৫ জুলাই সিলেটের নির্বাচনী পরিবেশ দেখতে এসে তিনি এ নির্দেশনা দেন। গত বুধবার রাতে সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমান হুমায়ুন রশিদ চত্বরে একটি মিছিল থেকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রায়হান আহমদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল ফজল জানান, এস আই রায়হান মোটরসাইকেলযোগে থানা থেকে কদমতলী ফাঁড়িতে যাচ্ছিলেন। একদল যুবক ধানের শীষের মিছিল নিয়ে এসে তাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে। গতকাল সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ ঘটনায় বিএনপির ৪৮ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত পুলিশ : সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনী উৎসব বিনষ্ট করতে তৃতীয় কোনো শক্তি যাতে অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি।

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনাও রয়েছে আমাদের।

রিটার্নিং অফিসার মো. আলীমুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কেন্দ্রে যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে আমরা তৎপর আছি। এরই মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে ২৪ জন। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে  স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি মোবাইল কোর্টও কাজ করবে।

সর্বশেষ খবর