শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলায় ফয়জুল হাসানকে প্রধান অভিযুক্ত করে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। ফয়জুল হাসান ছাড়া অন্য অভিযুক্তরা হলেন তার বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান। ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, আদালতে দাখিল করা ৩৫৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৬০ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। ঘটনার বিভিন্ন স্থিরচিত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ, মোবাইল কললিস্ট ও অন্যান্য প্রমাণ বিশ্লেষকের মাধ্যমে জানা গেছে, ফয়জুল নিজেই জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করেন। বাকিরা ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত। ওসি বলেন, বিভিন্ন উসকানিমূলক বই পড়ে ও ওয়াজ শুনে ফয়জুলের ধারণা হয় জাফর ইকবাল ‘নাস্তিক’। তাই তিনি জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করে বছরখানেক আগে ছুরি কেনেন। এরপর সুযোগ পেয়ে হামলা চালান। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। গত ৩ মার্চ বিকালে শাবিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আয়োজিত ‘ইইই ফেস্টিভ্যাল’ চলাকালে মঞ্চে বসে থাকা জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। মাথার পেছন দিকে ও শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয় তাকে। আহত জাফর ইকবালকে প্রথমে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করেন। ঘটনার পরপরই হামলাকারী ফয়জুল হাসান আটক হয়েছিলেন। গণপিটুনিতে আহত হওয়ার পর তাকে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ পৃথকভাবে ফয়জুলের বাবা, মা, ভাই, মামা ও বন্ধুকে গ্রেফতার করে রিমান্ড নেয়। রিমান্ড শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়।