শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠালেন শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠালেন শামীম ওসমান

নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবিতে নারায়ণগঞ্জ নগরীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল শুক্রবার সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। তার আগে শিক্ষার্থীরা চাষাঢ়া এলাকায় খাজা সুপার মার্কেটের সামনে তার হাতে তুলে দেন প্রায় এক হাজার চাবি, যেগুলো তারা বৈধ কাগজ না থাকায় গণপরিবহন থেকে জব্দ করেছিল। চাবিগুলো পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে শামীম ওসমান ঘোষণা করেন, রাস্তায় অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে তিনি এসব শিক্ষার্থীকে নিয়ে মাঠে নামবেন। এ সময় তিন থানা সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের ওসিরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, জুমার নামাজের পর শামীম ওসমান এমপি হেঁটে হেঁটে রাস্তার অবস্থা দেখছিলেন। তখন শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করছিল। এমপি নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে এলেন খাজা সুপার মার্কেটের সামনে। তারা এমপিকে কিছু বলবার জন্য অনুরোধ জানায়। শামীম ওসমান মুগ্ধকর ভাষায় আন্দোলনকারীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘তোমরা সবাই সচেতন। আমার কাছে অনেক ভিডিও ফুটেজ ও ছবি আছে। তোমরা হয়তো ১০ জন। এই ১০ জনের মধ্যে অনেক অছাত্র ঢুকে পড়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে সেসব ডুকমেন্ট পৌঁছে গেছে। ওরা চায় তোমাদের মধ্যে ঢুকে ফায়দা লুটতে। তোমাদের সামনে রেখে অপকর্ম করে তারা গা ঢাকা দেবে।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য এটাই তোমরা প্রমাণ করেছ। সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা কাকে বলে তোমরা দেখিয়ে দিয়েছে। এখন তোমাদের দেখানো পথে পুলিশ প্রশাসনকে কাজ করতে দাও। এবার তোমরা ঘরে ফিরে যাও।’ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় মাহাথীর নামে একজন তখন বলে, ‘সংসদ সদস্য আমাদের মনের কথা বুঝতে পেরেছেন। তিনি আমাদের মঙ্গল চান। আমরা তার দেওয়া আশ্বাসে আস্থা রেখে বাড়ি ফিরে গেলাম।’ শিক্ষার্থীরা শামীম ওসমানের পক্ষে স্লোগান দিতে উদ্যত হলে তিনি ওদের বলেন, ‘এখন নয়, আগে আমরা কাজ করি। তারপর স্লোগান।’

শহরের মহিলা কলেজের ছাত্রী লাবণী আক্তার জানান, ‘এমপি তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় তারা উত্ফুল্ল। তাই আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

কটু মন্তব্য, ধাওয়া : চাষাঢ়া রাইফেলস ক্লাবের কাছে শিক্ষার্থীদের জটলার ভিতর দিয়ে রিকশায় চেপে যেতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি গোপীনাথ দাস। তাকে শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে তিনি ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আওয়াজ দেন। তখন জনতা তাকে ধাওয়া দিলে পালিয়ে একটি দোকানে ঢুকে শার্টার লাগিয়ে আত্মরক্ষা করেন। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আবারও তিনি আন্দোলনকারীদের গালাগাল করেন। এতে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। শিক্ষার্থীরা তাকে মারতে গেলে তিনি প্রথমে একটি ওষুধের দোকান, পরে ল্যাবএইড হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আশ্রয় নেন।

সর্বশেষ খবর