মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

গ্রেনেড হামলার আলামত ধ্বংস আদালতের অনুমতি ছাড়াই

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঞ্চল্যকর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেছেন, ২০০৪ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনার আলামত আদালতের অনুমতি ছাড়াই নষ্ট ও ধ্বংস করা হয়েছে। গতকাল অন্যতম আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় তার আইনজীবীর এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান ছাড়াও বিশেষ পিপি মো. আবু আবদুল্লাহ্ ভুঁইয়া, আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল, ফারহানা রেজা, আমিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এক সঙ্গেই বিচার চলছে দুটি মামলার। মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।

বাবরের পক্ষে গতকাল ষষ্ঠ দিনের মতো মুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী নজরুল ইসলাম। বাবরের যুক্তিতর্ক সমাপ্ত হলেই মামলা দুটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হবে। গতকাল আসামি বাবরের পক্ষে তার আইনজীবী এ মামলার সাক্ষী আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম (পিডব্লিও-১৫৩), মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম (পিডব্লিও-১৫৪)-এর সাক্ষ্য থেকে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। এ ছাড়াও মামলার আসামি মুফতি হান্নান ও মাওলানা আবদুস সালামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে যুক্তিতর্ক তুলে ধরে আসামিপক্ষ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহ্হার আখন্দের (পিডব্লিও-২২৫) সাক্ষ্য থেকে যুক্তিতর্ক তুলে ধরছেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম। এ যুক্তিতর্ক অসমাপ্ত অবস্থায় মামলার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবারও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে দলীয় সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় দলীয় নেত্রী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার দুটি মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। তার মধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামী নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের এবং সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ফলে এ মামলা থেকে তাদের নাম বাদ পড়েছে। অবশিষ্ট ৪৯ আসামির বিচার চলছে। আসামিদের মধ্যে ৮ জন জামিনে এবং ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিরা কারাগারে রয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় পর্যায়ক্রমে তদন্ত ও চার্জশিটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামও যুক্ত হয়েছে আসামির তালিকায়।

সর্বশেষ খবর