আজ নেপালের কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।
তবে রোহিঙ্গা নিপীড়ন নিয়ে চাপের মুখে থাকা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এ সম্মেলনে থাকছেন না। তার বদলে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট।
সম্মেলনে আঞ্চলিক এই জোটভুক্ত সাত দেশের নেতারাও অংশ নেবেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘শান্তির, সমৃদ্ধির, টেকসই বে অব বেঙ্গলের লক্ষ্যে’। প্রধানমন্ত্রীর নেপাল সফর সামনে রেখে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতকাল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হবে। আজ বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন শেখ হাসিনা। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল এবং নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশরাফি বিনতে শামস। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হবে হোটেল সোয়ালটি ক্রাউনি প্লাজায়। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী সেখানেই থাকবেন। বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেক হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সাত দেশের একটি জোট। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড ১৯৯৭ সালে ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ উদ্যোগের সূচনা করে। পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান বিমসটেকে যোগ দেয়। ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে বিমসটেক। কাজ করছে সার্ক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্ত আঞ্চলিক সহযোগিতার সেতুবন্ধন হিসেবে। শাহরিয়ার আলম বলেন, সম্মেলনের উদ্বোধনে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্যের পরপরই বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনে জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিমসটেক গ্রিড যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এবং ফৌজদারি ও আইনি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, এই সম্মেলন থেকে আমাদের একটি বড় অর্জন হবে গ্রিড কানেকটিভিটি নিয়ে এমওইউ। মিয়ানমারসহ সব সদস্য দেশ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একমত হয়েছে।’ এই সম্মেলন শেষ হবে একটি যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে। নেপালের কাছ থেকে বিমসটেক চেয়ারের দায়িত্ব পাবে শ্রীলঙ্কা। বিমসটেকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বর্তমানে কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফরের প্রথম দিনই নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তার সৌজন্যে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। রাতে সম্মেলনে আসা নেতাদের সন্মানে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলির দেওয়া নৈশভোজেও তিনি যোগ দেবেন। সফর শেষে আগামীকাল দুপুরে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
