শিরোনাম
শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী ডামাডোলে ফাঁকা সচিবালয়

উধাও তদবিরকারী ও দর্শনার্থীরা

নিজামুল হক বিপুল

নির্বাচনী ডামাডোলে পুরো দেশ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট এবং বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইতিমধ্যে তাদের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে। আর নির্বাচনের এই উত্তাপেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয় এখন পুরোপুরি ফাঁকা। বেশির ভাগ মন্ত্রীই নিজ নিজ এলাকায়। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তদবিরবাজদের উপস্থিতি কমে গেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সচিবালয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমতে শুরু করে। গতকাল সেই সংখ্যা একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে। ফলে সচিবালয়ে নেই চিরচেনা ভিড়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তদবিরকারী কারোই উপস্থিতি নেই। গতকাল সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, কৃষি, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে, সব কটি মন্ত্রণালয়ই একেবারে ফাঁকা। কোথাও বাইরের লোকজন অর্থাৎ সাধারণ দর্শনার্থী কিংবা তদবিরকারীর কোনো জটলা নেই। সাত নম্বর ভবনের লিফটম্যান সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘স্যার, এখন তো কোনো ঝামেলা নাই। সচিবালয় একেবারে ফাঁকা। তদবিরকারীদের কোনো পাত্তাই নাই। গত সপ্তাহেও লাইন ধরে লোকজন উঠেছে। আজ একেবারেই লোক নাই।’ স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, অধিকাংশ মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে না থাকায় তদবিরকারীরাও নেই। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই মন্ত্রীরা প্রায় সবাই নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। তাদের অনুসারী যারা সব সময় মন্ত্রণালয়ে আসতেন, তারাও এখন মন্ত্রীদের সঙ্গে এলাকায় চলে গেছেন। এ কারণে ভিড়ও কমে গেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে একজন কর্মকর্তা বলছিলেন, পাস দিতে দিতে নাভিশ্বাস উঠে যেত। একজন যুগ্মসচিব মাত্র পাঁচটি পাস দিতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রীদের কাছে যে-সংখ্যক লোক আসতেন, তাদের পাস দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ত। কয়েক দিন ধরে পাসের চাহিদাও কমে গেছে। দুপুরে সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু দুপুর ১টার পর সচিবালয়ে আসেন। তিনি মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায় গিয়েছিলেন। গতকালই ঢাকায় ফিরে মন্ত্রণালয়ের দফতরে আসেন। কিছু সময় মন্ত্রণালয়ে থেকে সাড়ে ৩টার দিকে বের হয়ে যান। একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম দুপুরে দফতরে এসে অবস্থান করেন বিকাল পর্যন্ত। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সোমবার বর্তমান সরকারের শেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে। ওইদিন মন্ত্রীদের প্রায় সবাই মন্ত্রণালয়ে আসবেন। এর পরদিন থেকে আর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী কাউকেই মন্ত্রণালয়ে পাওয়া যাবে না। সবাই ব্যস্ত থাকবেন নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগে।

সর্বশেষ খবর