বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছোটবেলা থেকেই দেশ সেবার স্বপ্ন দেখছি : মাশরাফি

আসিফ ইকবাল

ছোটবেলা থেকেই দেশ সেবার স্বপ্ন দেখছি : মাশরাফি

মাশরাফি বিন মর্তুজা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার। এখনো ক্রিকেট খেলছেন। অধিনায়ক বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলেই ব্যাট, বুট, গ্লাভস তুলে রাখার পরিকল্পনা টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের। সে হিসেবে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হতে এখনো সাত-আট মাস বাকি। কিন্তু এর আগেই নতুন ক্যারিয়ার শুরু করেছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে। নির্বাচন করবেন জন্মস্থান নড়াইল-২ আসনে। প্রার্থী হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল প্রথম মিডিয়ার মুখোমুখি হন মাশরাফি। ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার আগে কেন নির্বাচন করছেন— জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পর যদি আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়, পরের সাড়ে চার বছরে কী হবে আমি জানি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি সুযোগ দিয়েছেন। তা কাজে লাগাতে চাই। মানুষের সেবা করা সব সময় আমি উপভোগ করি। পরিবারের কেউ রাজনীতি না করলেও ছোটবেলা থেকেই আমি স্বপ্ন দেখছি দেশসেবার।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরার অন্যতম নায়ক মাশরাফি, যার সুদক্ষ নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল, এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। অদম্য যোদ্ধা মাশরাফি যখন নির্বাচন করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, তখন থেকেই তাকে নিয়ে মানুষের বিপুল আগ্রহ। কেন নির্বাচন করবেন, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে দেশের উন্নয়নে কীভাবে অবদান রাখবেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে খেলা কি চালিয়ে যাবেন?— এমন সব প্রশ্নের জন্ম নেয় তার নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণায়। প্রার্থিতা ঘোষণার পর মিডিয়া মুখিয়ে পড়ে মাশরাফির মুখ থেকে উত্তর শুনতে। অবশেষে গতকাল টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক মিরপুরে মুখোমুখি হন মিডিয়ার। ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দেশে-বিদেশে অসংখ্যবার মুখোমুখি হয়েছেন মিডিয়ার, কিন্তু গতকালের মতো জনাকীর্ণ ছিল না কোনোটি। এই প্রথম তিনি মুখোমুখি হয়েছেন রাজনীতিবিদ হিসেবে। কথা বলেছেন একজন প্রার্থী হয়ে। নার্ভাসও ছিলেন কিছুটা। পাড়া-প্রতিবেশীর বিপদে-আপদে সবার আগে থাকা মাশরাফি দেশসেবার জন্য বেছে নিয়েছেন রাজনীতি। অবশ্য ‘নড়াইল ফাউন্ডেশন’ গঠন করে আগে থেকেই এলাকায় কাজ করে আসছেন তিনি। দেশসেবার বিষয় নিয়ে বলেন, ‘আমার এলাকায় কাজ করার জন্য আমার একটা ফাউন্ডেশন আছে। আমার নির্বাচন করার বিষয়টি তাদের জন্য কাজ করার গ্রেট অপরচুনিটি।’ ২০০১ সালে ক্যারিয়ার শুরু। এর পর থেকে নানা বিপত্তি পেরিয়ে এখনো খেলছেন এবং দেশকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে। তবে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চান ম্যাশ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় নির্বাচন করছেন। কী ভেবে নির্বাচন করছেন— উত্তরে তিনি বলেন, ‘আগেই বলেছি, আমার ক্যারিয়ার শেষের দিকে। আমি টেন্ডুলকার বা ম্যাকগ্রা নই যে আমার কথা মানুষ স্মরণ রাখবেন। আমি আমার মতো করেই ক্রিকেট খেলেছি। তবে সব সময় এনজয় করেছি মানুষের জন্য কাজ করতে পারার বিষয়টি। এটি আমার ছোটবেলার শখ ছিল বলতে পারেন। সেই সুযোগটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন। বৃহৎ পরিসরে যদি এখন কিছু করা যায়।’ ৯ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। বিশ্বকাপ ক্রিকেট যদি হয় শেষ আসর, তাহলে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজটাই ঘরের মাটিতে শেষ। এরপর নেমে যাবেন নির্বাচনী প্রচারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বে মাশরাফিই একমাত্র ক্রীড়াবিদ, যিনি খেলোয়াড় থাকাবস্থায় জাতীয় নির্বাচন করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর