ঢাকার দুই সিটি ভোটের তারিখ পরিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন দাবি জানিয়ে এলেও নির্বাচন কমিশন ‘অনড়’ অবস্থানে রয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ৩০ জানুয়ারি ভোট করার কথা বলছে নির্বাচন কমশিন (ইসি)। এরই মধ্যে রিট হওয়ায় আদালতে যে নির্দেশনা আসবে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। এদিকে গতকাল এই প্রশ্নে রিটের শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করেছে হাই কোর্ট। অন্যদিকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলছে, ভোটের দিন কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে এর দায় সরকার ও ইসিকে নিতে হবে। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল। ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে সব ধরনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সংগঠনটি। এদিকে ইসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থী’ নামে আরেকটি সংগঠন। নির্বাচন ভবনে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলেছে। তারা তাদের অবস্থানেই রয়েছে। আমরা সুখকর কোনো সংবাদ পাইনি। হতাশ মনে ফিরে যাচ্ছি। যদি তারিখ পরিবর্তন করা না হয়, আর যদি কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে, এর দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।’ তিনি জানান, রংপুর উপনির্বাচন হয়েছে দুর্গাপূজায়। এবার সিটি ভোট করছে সরস্বতী পূজায়। এগুলো একই সূত্রে গাঁথা। হিন্দু সম্প্রদায় রংপুর উপনির্বাচন বর্জন করেছে। এবারও পূজায় ভোটের তারিখ নির্ধারণে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়নি। রানা দাশগুপ্ত জানান, কমিশন বলেছে, তাদের এখন করার কিছু নেই। বিষয়টি নিয়ে কোর্টে রিট আবেদন হয়েছে। আদালতের আদেশ পেলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে তারা।
আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় কমিশন : সরস্বতী পূজার কারণে সিটি নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর। গতকাল বিকালে সাংবাদিকদের সচিব জানান, সব দিক বিবেচনায় নিয়েই ৩০ জানুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ জানুয়ারি ঐচ্ছিক ছুটি। ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার। আবার ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা। সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভোটের তারিখ ৩০ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, ‘এখন বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি রিট আবেদন হয়েছে। আদালত যে নির্দেশনা দেবে কমিশন সেই সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবে।’
আয়কর বিবরণী ওয়েবসাইটে চায় সুজন : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের আয়কর বিবরণী ও কর পরিশোধের তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বিকালে সিইসির কাছে এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি জানান, ইসির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচনসহ আগের সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।ইসিতে তাবিথের অভিযোগ : রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের সময় কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। গতকাল ইসির কাছে এই চিঠি পৌঁছেছে। নিরাপত্তা চেয়ে চিঠিতে তাবিথ লিখেছেন, মিরপুর দারুস সালাম থানা এলাকায় প্রচার চালানোর সময় নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ ও কয়েকজনকে গুরুতর আহত করেছে আওয়ামী লীগ। এ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাবিথের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, ‘তাবিথ আউয়ালের অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা এ বিষয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানাব।’