সব ধরনের ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ এবং আমানতের সুদ ৬ শতাংশ বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সরকার একটার পর একটা সুবিধা দিলেও ব্যাংক মালিকরা আবারও অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা চাইবেন।
তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ঋণের সুদহার ৯ শতাংশের বাইরে রাখা যায় কিনা সেটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। গতকাল রাতে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি এবং ব্যাংক এমডিদের সংগঠন এবিবির সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানে বিএবির কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএবি এবং এবিবি এসএমই ঋণে সুদহার ৯ শতাংশের বাইরে রাখার দাবি জানালে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব উদ্যোক্তা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে তাদের সাহায্য করা হবে। সরকারের সামনে যে সম্পদ আছে তার পুরোপুরি ব্যবহার করা হবে। অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ঋণ ও আমানতে সুদ হার ৯ ও ৬ শতাংশ বাস্তবায়নে যেন কোনো ব্যত্যয় না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
ব্যাংকগুলো সেবা দিতে পারে না, খেলাপি ঋণ বেশি কেন তা নিয়ে বারবার সংসদে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি থেকে বের হতে আগে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কোর্টে খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত ৬৩ হাজার মামলা আছে। এ থেকে বের হতে হবে। ব্যাংকগুলোকে পরিচালন ব্যয় কমাতে হবে বলেও জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত ৬ শতাংশের বেশি সুদে ব্যাংক যেন রাখতে না পারে সে বিষয়ে সংসদে আগামীকাল নিদের্শনা আসতে যাচ্ছে। সরকারের এসব টাকা সরকারি কোষাগারে আনা হবে বলেও জানান তিনি। বৈঠকে ব্যাংক মালিক ও এমডিদের পক্ষ থেকে দুটি বিষয়ে দাবি করা হয়। এর একটি হলো এসএমই ঋণকে ৯ শতাংশের বাইরে রাখা অন্যটি হলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৬ শতাংশ সুদে নিশ্চিত করা। তাহলেই আগামী এপ্রিল মাস থেকে ব্যাংক আমানতে ৬ ও ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন তারা। তবে ব্যাংক মালিকরা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদ ঋণ পুনঃ তফসিল করায় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের আদায়কে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বলে বৈঠকে জানিয়েছেন।