সোমবার, ১১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢামেকে ১০ জনসহ সর্দি-কাশি নিয়ে আরও ১৪ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা সন্দেহে ভর্তি হওয়া ১০ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ ছাড়া সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চারজন মৃত্যুবরণ করেছেন। খুলনা, নড়াইল, চাঁদপুর ও মেহেরপুরে তাদের মৃত্যু হয়। সব মিলে করোনা উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাগুলোয়। তাদের বাড়িঘর এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে করোনা ইউনিটে ১০ মৃত্যু : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান বলে ঢামেক হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করে। জানা গেছে, গত ২ মে থেকে চালু হওয়া ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ জনে। গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০ জন মারা যান। তারা হলেন- মিন্টু (৫৫), কামাল হোসেন (৫৫), হিম্মত আলী (৭০), সুশান্ত কুমার (৫৫), জহিরুল ইসলাম (৫৬), ছায়েতুন নেসা (৬০), নুরুল ইসলাম (৪০), সিরাজুল ইসলাম (৫০), এ এইচ এ রহমান (৬৮) ও জাকির হোসেন (৪০)।

খুলনায় করোনার উপসর্গ নিয়ে খাদিজা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ডায়াবেটিসসহ নানা সমস্যা নিয়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে খাদিজাকে ভর্তি করা হয়। গতকাল তিনি মারা যান। তার বাড়ি মহানগরীর টুটপাড়া এলাকায়। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা জানার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকা থেকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার বড়দিয়া-চোরখালী গ্রামের বাড়িতে ফেরার তিন দিন পর বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী (৫২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে তিনি মারা যান। গতকাল সকালে নিজের ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। বিশ্বজিৎ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আবদুল মোমেন। নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খানম জানান, নড়াগাতি থানার খাশিয়াল ইউনিয়নের বড়দিয়া চোরখালী গ্রামের নির্মল রায় চৌধুরীর ছেলে বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে গত তিন দিন আগে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার পর তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। শনিবার গভীর রাতে তিনি মারা যান। গতকাল সকালে পরিবারের সদস্যরা তাকে মৃত দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। নিয়ম মেনে তার সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আযান গ্রামে ঠা াজ্বর ও কাশি নিয়ে আমিত হাসান (১৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। অমিত হাসান গাংনী উপজেলার আযান গ্রামের হাফিজুল ইসলামের ছেলে। কয়েক দিন ধরে তিনি সাধারণ ঠা াজ্বর ও কাশি ভুগছিল। গতকাল ভোরে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। করোনা সন্দেহে অমিতের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাফর আলী জানান, আমিতের পরিবার বলেছে তিনি গত কয়েক দিন ধরে ঠা াজ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন। গাংনী থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান জানান, অল্প সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার রিয়াজুল আলম জানান, অমিত হাসানের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল হাতে পাওয়ার পর করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না নিশ্চিত হওয়া যাবে। চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের কাপিলাবাড়ি গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আ. রব (৫৫) করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি কয়েক দিন ধরে সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এমনি উপসর্গ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে নিজ বাড়ি আসেন এবং শনিবার রাতে নিজ গ্রামের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল সকালে উপজেলা দাফন কমিটি, অফিসার ইনচার্জের প্রতিনিধি ও হাসপাতাল প্রতিনিধিরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন করেন।

সর্বশেষ খবর