করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গুজ্বর। গত মাসের তুলনায় এ মাসে তিনগুণ বেশি রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুজ্বরের মৌসুম শুরু হওয়ায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, এ মাসের এখনো চার দিন বাকি থাকতেই ৬৬ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন। জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৬ জন, জুনে ২০ জন, মে মাসে ১০ জন, এপ্রিলে ২৫ জন, মার্চে ২৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ জন এবং জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৯ জন। মারা গেছেন একজন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১৫ জন। জুলাই থেকে শুরু হয় ডেঙ্গুজ্বরের মৌসুম। গত বছর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এ বছর ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব যাচাইয়ে জরিপ পরিচালিত হয়েছে। জরিপে দেখা যায়, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ২৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। ‘ডিসেমিনেশন অন মুনসুন এডিস সার্ভে-২০২০’ নামের জরিপের ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোট ১০০টি এলাকায় (ডিএনসিসি ৪১টি এবং ডিএসসিসি ৫৯টি) দুই হাজার ৯৯৯টি বাড়িতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের ভেক্টরের ওপর এই জরিপ কাজ পরিচালিত হয়। জরিপে বলা হয়েছে, উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৬টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এরমধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের ভিতরে রয়েছে ১০, ১১, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৪, ২৯, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভিতরে রয়েছে ২, ৪, ৮, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ২৫, ৩৪, ৪০, ৪১, ৪৫ এবং ৫১ নম্বর ওয়ার্ড। তবে উত্তরে ১৭ নম্বর এবং দক্ষিণে ৫১ নম্বর ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি হলে তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে বিশেষ অভিযান।
একযোগে পুরো সিটি করপোরেশনের প্রতিটি বাড়ি-স্থাপনায় গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।