বরিশালে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি দুর্নীতি মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক মেয়র কামাল এবং কথিত ঠিকাদার মো. জাকির হোসেনকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক গতকাল পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। আহসান হাবিব কামাল সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক।
দন্ডপ্রাপ্ত অপর চারজন হলেন- তৎকালীন বরিশাল পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইছাহাক, তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী (সিটি করপোরেশনের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) খান মো. নুরুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস ছাত্তার এবং কথিত ঠিকাদার মো. জাকির হোসেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হারুন অর রশিদ মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ১৯৯৫-৯৬ সালে বরিশাল টিএন্ডটির ভূগর্ভস্থ ক্যাবল স্থাপনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য সংশ্লিস্ট দফতর থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু কোনো প্রকার টেন্ডার আহ্বান না করে এবং রাস্তার কাজ না করেই হাই ইয়ং নামে একটি কথিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে চারটি চেকের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন আসামিরা। বাস্তবে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন। এ ঘটনায় ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা মো. আবদুল বাসেত বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক আবদুল বাসেত ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরপরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। এদিকে রায় ঘোষণার পর সংক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের অনুসারীরা আদালত চত্বরে এবং ফজলুল হক এভিনিউ এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা বলেন কামালের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টু এবং অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু।
