শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার ছোবলে স্থবির রাজনীতি

মাহমুদ আজহার, রফিকুল ইসলাম রনি ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ

করোনার ছোবলে স্থবির রাজনীতি

করোনার ছোবলে বছরজুড়েই স্থবির প্রায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড। নিরুত্তাপ রাজনীতি এখনো সচল হয়নি। নেই সভা-সমাবেশ বা রাজনৈতিক কোলাহল। করোনাকালে স্থানীয় সরকারসহ কয়েকটি উপনির্বাচনে কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও পুরো বছরই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়নি রাজনীতি। সীমাবদ্ধ ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তৃতা-বিবৃতিতেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ জোট-মহাজোটের তেমন কোনো কার্যক্রমও ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার মতো জাতীয় দুর্যোগ ঘিরে রাজনৈতিক ঐক্য হওয়ার একটি সুযোগ ছিল। কিন্তু করোনা থেকেও রাজনীতিবিদরা শিক্ষা নিতে পারেননি। একে অন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেননি। সমাজের প্রতিটি স্তরেই বেড়েছে বৈষম্য, দুর্নীতি, নির্যাতন, ধর্ষণসহ নানা অনিয়ম।

চলতি বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত চিহ্নিতের পর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটিতে যায় দেশ। মাঝে সংক্রমণের হার কিছুটা কম থাকলেও এখন মৃত্যু ও শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। এ কারণে এখনো অনেকটাই রাজনীতিশূন্য দেশ। করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সব রাজনৈতিক দল তাদের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। সাংগঠনিক কার্যক্রম, রাজপথের সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে শুরু হয় ভার্চুয়াল রাজনীতি। প্রথম দিকে রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্যে কিছু ত্রাণ কার্যক্রম চালালেও পরে ভার্চুয়াল রাজনীতিতেই কর্মকান্ড সীমিত হয়ে যায়। দলগুলো এখনো ভার্চুয়াল রাজনীতিই অব্যাহত রেখেছে।

সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রায় এক যুগ ধরেই দেশে প্রকৃত অর্থে কোনো রাজনীতি নেই। করোনাকালে তো পুরোপুরি স্থবির রাজনীতিসহ সবকিছুই। তবে বৈশ্বিক দুর্যোগের মধ্যে রাজনীতিবিদদের একটি দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। তারা সরকারে থাকুন আর বাইরেই থাকুন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ দুর্যোগ কীভাবে সম্মিলিতভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় তাই তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু করোনাকালে রাজনীতিকদের মধ্যে এ ঐক্য লক্ষ্য করা যায়নি। সরকারি দলের দিক থেকে বিরোধী নেতাদের সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়নি। বিরোধী দলের নেতারাও জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সরকারকে সহযোগিতার প্রয়োজন মনে করেননি। ফলে উভয় পক্ষই রাজনৈতিক দীনতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় দুর্যোগে আমাদের রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি সুযোগ ছিল, কিন্তু হতে পারিনি। জনগণ যেটুকু সহযোগিতা পেয়েছে কমবেশি সরকারি কর্মকর্তাদের থেকেই। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে যা পেয়েছে তা অতি সামান্য। আমাদের রাজনীতিকদের ১০-১৫ বছরের অতীত কর্মকান্ড থেকে যা বুঝতে পারি তা হলো, ভবিষ্যতেও তারা দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন, সে ভরসা খুবই কম।’

আওয়ামী লীগ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ২০২০ সাল ঘিরে জমকালো আয়োজনের প্রস্তুতি ছিল আওয়ামী লীগের। এ জন্য ঘোষণা করা হয় কর্মসূচিও। কিন্তু করোনার আঘাতে কর্মসূচি সীমিত করা হয়। জেলা-উপজেলার সম্মেলন নিয়ে বছরের শুরুতে তোড়জোড় চলে। করোনার কারণে সাংগঠনিক কর্মকান্ড সীমিত হলেও দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী বছরব্যাপী সক্রিয় ছিলেন। মানবতার পাশে ছিল ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর প্রথম যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি। ওই দিন সভা মুলতবি রাখা হয়। পর দিন গণভবনে আবার সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১০ জানুয়ারি মুজিববর্ষ উদ্যাপনের জন্য ক্ষণগণনার কর্মসূচি শুরু করা হয়। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর জমকালো অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলতে থাকে আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোট নিয়ে সাংগঠনিক ব্যস্ততায় বছর শুরু করে দলটি। সিটি ভোটে বিজয়ী হয়ে জেলা-উপজেলা সম্মেলনে জোর দেয় তারা। করা হয় তিনটি জেলা ও কয়েকটি উপজেলা সম্মেলন। ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের আঘাত আসে। স্থগিত করা হয় সব সাংগঠনিক কর্মসূচি। দলীয় কর্মসূচি না থাকলেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। করোনার আঘাতের মধ্যেই দেশে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বন্যা দেখা দেয়। সে সময়ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অসহায় মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।

মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা ‘জনতার মেয়র’ খ্যাত সিলেটের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হাজী মকবুলসহ ৬ শতাধিক নেতা-কর্মী। করোনার কারণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে বের না হলেও কেন্দ্রীয়, জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন। ভার্চুয়াল মিটিংয়ে দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। মাঠের কর্মসূচি না থাকলেও বিষয়ভিত্তিক ভার্চুয়াল সভা করছে আওয়ামী লীগ। দলের সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা করোনার মধ্যে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

প্রায় সাত মাস পর ৩ অক্টোবর গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে সাংগঠনিক গতি আনতে আট বিভাগের জন্য আটটি সমন্বয় টিম গঠন করা হয়। নভেম্বরে ফের শুরু হয় জেলা-উপজেলা সম্মেলন। এর মধ্যেই পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামেন নেতারা। বছরের শুরুতেই ভোট ও সম্মেলন, শেষ দিকে পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই, জেলা-উপজেলা সম্মেলনে দল গোছানোর মধ্যে সক্রিয় কেন্দ্রীয় নেতারা। পাঁচটি উপনির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে হয়েছে চলতি বছর। প্রতি বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করলেও এবার করোনার কারণে তা হয়নি। ভার্চুয়ালি আলোচনা সভা হয়। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের নতুন মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবীণ রাজনীতিক আমির হোসেন আমুকে। চলতি বছরে জাতীয় সংসদের নিয়মিত ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনেও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। অধিবেশনের আগে সবাইকে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা করা হয়। কোরাম পূরণে যত জন এমপি প্রয়োজন সেভাবেই ডাকা হয় অধিবেশন। অনেক প্রবীণ নেতা ছিলেন ঘরবন্দী। করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কমিটি, দলের বিভিন্ন উপকমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাজপথে সক্রিয় হন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বিএনপির ভার্চুয়াল রাজনীতি : টানা ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি মাঠের রাজনীতিতে নীরব থাকলেও করোনাকালে বেড়েছে প্রযুক্তিনির্ভরতা। দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম এখনো প্রায় স্থবির। কিছু অঙ্গসংগঠনের কমিটি হলেও অনেকটা কাগজে কলমে। কোথাও কোনো কাউন্সিল হয়নি। নেতা-কর্মীদের আশা জাগানিয়া কোনো কর্মসূচি ছিল না বিএনপিতে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘরে বসেই বছর পার করে। দল ও দুই জোটে বেড়েছে সন্দেহ-অবিশ্বাস। করোনা পরিস্থিতিতে ছিল না জোটবদ্ধ কর্মসূচি। বৈঠকও হয়েছে হাতে গোনা দু-একটি।

তবে বছরের শুরুর দিকে বিএনপির গুটিকয় এমপির সংসদে যোগদান, সরকারের নির্বাহী আদেশে দলের প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদে ১২ মাসের জামিন, বাসায় অবস্থানসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা রাজনীতিতে নানা আলোচনার সৃষ্টি করে। ১২ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনের দিন রাজধানীতে পরপর নয়টি গাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন দেওয়া ঘিরে রাজনীতিতে কিছুটা উত্তাপের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বিএনপির প্রায় ১ হাজার ৫০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। গ্রেফতারও হন বেশ কয়েকজন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সূত্র জানান, সব মিলিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মামলায় আসামি প্রায় ৩৭ লাখ।

বছরের শেষ দিকে এসে সম্প্রতি সিনিয়র দুই নেতা ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম ও শওকত মাহমুদকে শোকজ করা নিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে কিছুটা উত্তাপ সৃষ্টি হয়। তবে দুই নেতার শোকজের জবাব দেওয়ার পর এখন আবারও নীরব দলের রাজনীতি। জানা যায়, ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না বিএনপি।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাবেক এমপি আবু হেনাসহ বেশ কয়েকজন নেতা মারা গেছেন। দলের প্রায় অধর্শত নেতা এখনো করোনায় আক্রান্ত। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিএনপি।

এদিকে করোনাকালে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরব। কেন্দ্রীয় নেতারা এখন প্রতিনিয়ত ভার্চুয়ালি কথা বলছেন। দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, বিএনপির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডের ৯০ ভাগই এখন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অবশ্য জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ হচ্ছে বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত নয় মাসে শতাধিক ভার্চুয়াল কর্মসূচি করেছেন বিএনপির হাইকমান্ড। প্রতি সপ্তাহেই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়ালি বৈঠক হচ্ছে। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনসহ নানা দিবসভিত্তিক কর্মসূচিও হচ্ছে ভার্চুয়ালি। অবশ্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী মাঝেমধ্যেই সশরীরে সংবাদ সম্মেলনও করছেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিষয়ভিত্তিক অর্ধশত ভার্চুয়াল সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

জানা যায়, দলের ভার্চুয়ালি এ কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে। এর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনআরসি)-এর একটি উইং। এটি মূলত ‘বিএনপি কমিউনিকেশন’ নামে পরিচিতি। এর প্রধান দলের কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুদ্দিন স্বপন।

যেমন চলছে জাতীয় পার্টির কার্যক্রম : করোনাকালে মাঠে-ময়দানে বড় সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও ঘরোয়া পরিবেশে দলটির কার্যক্রম সীমিত ছিল। তবে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। এর মধ্যেই দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানোর জন্য নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। সাংগঠনিক বিভাগগুলোকেও করা হচ্ছে চাঙ্গা। বিশেষ করে ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা মহামারীর শুরুর দিকে আমরা প্রথমেই মাস্ক বিতরণের মধ্য দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। লকডাউনের সময় আমরা সাধ্যমতো দুস্থ মানুষকে সহায়তা করেছি। এসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ইতিমধ্যে সবার জন্য বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করার জন্য জোর দিয়ে আসছেন।’

এদিকে করোনা মোকাবিলায় সংসদের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে খোদ নেতাদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ সংসদ সদস্যের এলাকায় অনেক দুস্থ ত্রাণ পাননি। কেন্দ্র থেকে যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল সেগুলো এখন কাগজে সীমাবদ্ধ। তবে করোনার প্রথম দিকে ২৩ এমপির মধ্যে চার থেকে পাঁচজন অনেক ভালো কাজ করেছেন। পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বাসায় থেকে করোনাভাইরাসে দেশ ও জনগণর পক্ষে দাঁড়াতে নেতা-কর্মীদের প্রতি একাধিকবার অনুরোধ করলেও তেমন সাড়া দেননি জাপার শীর্ষ নেতারা।

সর্বশেষ খবর