করোনা মহামারী থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষায় সরকার যে ভ্যাকসিন তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে এবার ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ঋণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ওই ব্যাংকটি এ বাবদ বাংলাদেশকে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৩০০ কোটি ডলার) সমপরিমাণ অর্থ দিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছে। এখন ঋণের টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন নিয়ে কাজ করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, কভিড-১৯ প্রতিরোধে দেশের সিংহভাগ মানুষকে টিকা দিতে যে তহবিল গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার, এডিবি ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি চূড়ান্ত হলে ওই তহবিল গঠনে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে। এ দুটি সংস্থা থেকে সরকার প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ প্রত্যাশা করছে।
সূত্র জানান, বাংলাদেশে কভিড-১৯ মোকাবিলায় জাতীয়ভাবে টিকাদানের যে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর, সে অনুযায়ী তিনটি পর্যায়ে পাঁচটি ধাপে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। এ পরিমাণ মানুষকে টিকা দিতে সরকারের প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ২৫০ কোটি ডলার অর্থের প্রয়োজন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে সরকার।
জানা গেছে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভ্যাকসিন কেনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহে গত নভেম্বরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও দাতা সংস্থার কাছে চিঠি দেয় সরকার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি ছাড়াও জার্মানি এ ফ্রান্সের নাম ছিল। এর মধ্যে গত মাসে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছে। ওই সংস্থাগুলোর বাইরে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন কিনতে বড় ধরনের অর্থায়নের প্রস্তাব দেয়।অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইউরোপের এ ব্যাংকটি যে পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে তা বিশ্বব্যাংক, এডিবির প্রস্তাবিত ঋণের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ। ওই কর্মকর্তা জানান, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রায় ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের কাছ থেকে অর্থায়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে কাজ করছে ইআরডি। সংশ্লিষ্টরা জানান, টিকা কিনতে সবচেয়ে বড় ফান্ড দিচ্ছে এডিবি। সংস্থাটি এ খাতে বাংলাদেশকে প্রায় ৯৪ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এডিবির বোর্ডসভায় অনুমোদন পেলে চলতি মাসেই এ ঋণের বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে যাবে সরকার।
আলোচনা চূড়ান্ত হলে দ্রুত চুক্তি হতে পারে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গেও।