শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কাবাডি দলের মেয়েদের মারধরের অভিযোগ

চুল কেটে প্রতিবাদ শিক্ষিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে একটি স্কুলের কাবাডি দলের ছাত্রীদের মারধর ও চুল ধরে টানার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। নগরের ইয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের কাবাডি দলের ছাত্রীদের কয়েকজন ফ্রেঞ্চ স্টাইলে চুলের বেণি করায় বকাঝকা, মারধর করেন প্রধান শিক্ষিকা নিপা চৌধুরী। ছাত্রীদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার এমন আচরণে নিজের মাথার চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্কুলের শরীর চর্চা শিক্ষিকা জাহিদা পারভীন।

অভিযোগ উঠেছে, এ ঘটনার পর জাহিদা পারভীন বৃহস্পতিবার স্কুলে গেলে কর্তৃপক্ষ তাকে প্রবেশ করতে দেয়নি। মাথা ন্যাড়া করায় তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ নিয়ে চারদিকে চলছে সমালোচনা। শরীর চর্চা শিক্ষিকা জাহিদা পারভীন গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেন। সন্ধ্যায় শিক্ষা বিভাগে বৈঠক হয়। জানা যায়, থানা পর্যায়ের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ইয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ১২ জন মেয়ের একটি কাবাডি দল গঠন করা হয়। ম্যাচটি ছিল গত ৮ সেপ্টেম্বর। কাবাডির নিয়ম অনুযায়ী, চুলে ক্লিপ লাগানো যায় না। তারা ফ্রেঞ্চ স্টাইলে চুলের বেণী করে। এতে খেলতে সুবিধা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচের একদিন আগে অংশগ্রহণকারী দলের ছবি তুলে কো-অর্ডিনেটরের কাছে জমা দিতে হয়। ছবি তোলার জন্য ছাত্রীদের জার্সি পরে তৈরি করা হয়। তারা বেণী করে জার্সি পরে তৈরি হয়।

শরীর চর্চা শিক্ষিকা জাহিদা পারভীন বলেন, ওই দিন ছাত্রীদের ছবি তুলতে প্রস্তুত করে আমি ওয়াশ রুমে যাই। সেখান থেকেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনি। বের হয়ে দেখি প্রধান শিক্ষিকা কয়েকজন ছাত্রীকে চুল ধরে মারধর ও বকাঝকা করছেন। দুই মেয়েকে কান্না করতেও দেখি। তখন প্রধান শিক্ষিকাকে জানাই, আমি ছাত্রীদের বেণী করতে বলেছি। এ কথা শুনে তিনি আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। প্রধান শিক্ষিকার কারণে পরের দিন ম্যাচে অংশ নিতে দেরি হয়। মাঠে পৌঁছাতে ৩৫ মিনিট দেরি হয়। গিয়ে শুনি প্রতিপক্ষ দল ওয়াকওভার পেয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের বকা, অপমান ও চুল ধরে টানার প্রতিবাদে গত ১৩ সেপ্টেম্বর আমি মাথা ন্যাড়া করি। এ নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর ফেসবুকেও লিখি। ঘটনার পরই আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। জাহিদা পারভীনের অভিযোগ, ‘খেলার জন্য মেয়েদের নিয়ে কোনো টিম করতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। স্কাউট করতে দেওয়া হয় না। মেয়েদের  নিয়ে স্কুলের বাইরে যেতে দেয় না। চুল ন্যাড়া করার পর আমাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ হুমকিও দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার স্কুলে গেলে কর্তৃপক্ষ আমাকে প্রবেশ করতে দেয়নি। মাথা ন্যাড়া করার কারণে জোর করে আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।’ অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিপা চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছাত্রীদের বকাবকি বা মারধর করিনি।’ জাহিদার পদত্যাগে আমরা চাপ দেইনি। তিনি শিক্ষাদানের যোগ্য নন উল্লেখ করে আরও সাত-আটদিন আগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তাকে স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা। স্কুলে সিসিটিভির ফুটেজ সব আছে। কোতোয়ালি থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হুদা ছিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। জাহিদা পারভীনের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি তিনি নিজ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

সর্বশেষ খবর