সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

রিজার্ভের যে অবস্থা দিনে বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রিজার্ভের যে অবস্থা দিনে বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে রিজার্ভের যে অবস্থা, আমরা জানি না সামনে কী হবে। এখন সাশ্রয়ী হওয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রয়োজনে দিনের বেলা বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত ‘শিল্পে জ্বালানি সংকট সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা এখন এলএনজি আনছি না। এ সময়ে ২৫ ডলার হিসাব ধরেও যদি এলএনজি আমদানি করতে যাই, চাহিদা মেটাতে অন্তত ছয় মাস কেনার মতো অবস্থা আছে কিনা সন্দেহ। তবে কয়েকটি জায়গা থেকে খুব কম দামে এলএনজি কেনার জন্য প্রস্তাব পেয়েছি। ১০ বা ১২ ডলারে দেবে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি। কীভাবে তারা দেবে তা জানি না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কবে শেষ হবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেলে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিতাম। ভোলায় কিছু গ্যাস আছে, সেগুলো সিএনজিতে রূপান্তর করে নিয়ে আসব। সেখানে ৮০ এমএমসি গ্যাস আছে। দু-তিন মাসে সেটা নিয়ে আসার চেষ্টা করব। অন্যদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে যাচ্ছি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে এক হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ পাব বলে আশা করা হচ্ছে। আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সোলার প্যানেলের মাধ্যমে উৎপাদন করব। তখন সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন যদি আমরা গ্যাস বাঁচাতে চাই, তাহলে লোডশেডিং বাড়বে, তখন সবাই সমালোচনা করবে। অথচ একসময় সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না। বর্তমান সংকটকালে আমরা চাইলে এসি বন্ধ রাখতে পারি। বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে পারি। সারা দেশে যে পরিমাণ এসি চলে তারই পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট চাহিদা আছে। ফলে এ সময় আমরা এসি বন্ধ রাখব বা কম চালাব। এতে দু-তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। গ্যাস সাশ্রয় হবে। সবাই মিলে যদি রাজি হই লোড কমাব তা হলে কিছু গ্যাস সাশ্রয় হবে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি ও শিল্পে বিদ্যুৎ বেশি দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রয়োজনে অন্যরা বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করবে। আমরা শপথ নেব, দরকার হলে দিনেরবেলা কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না। বিদ্যুৎ যদি আমরা শিল্পে দেই, তাহলে আবাসিকে সরবরাহ কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা কিছু ফাইন্যান্সিং চাইব, কিছু ভালো দেশের কাছে। এখন এ ব্যাপারে কতদূর সমর্থন পাব জানি না, তবে খুব শিগগিরই আমরা চেষ্টা শুরু করব।

সভায় এফবিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন শিল্পকারখানা খুলে দিলেন তখন অনেক বুদ্ধিজীবী এর বিরোধিতা করেছিলেন। তখন শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল, বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। চলমান এই জ্বালানি সংকটে প্রধানমন্ত্রীকে এখন আবার সেই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেইন প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর