শি জিন পিং তৃতীয়বারের মতো চীনের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর গতকাল দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, ‘চীনকে বিশ্বের প্রয়োজন। চীন ছাড়া বিশ্ব উন্নতি করতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য পুরো পার্টিকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’ সূত্র : সিনগুয়া, আল জাজিরা, রয়টার্স, তাস। খবরে বলা হয়, গতকাল শি জিন পিংকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সাধারণ সম্পাদক করে পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শি জিন পিং এখন আরেক মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। মাও সেতুং পরবর্তী চীনে প্রথমবারের মতো তৃতীয় মেয়াদে শি প্রেসিডেন্ট হবেন। একে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গতকাল শি জিন পিংকে সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও তাঁকে দেশটির কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এ ছাড়া সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। তাঁরা হলেন- শি জিন পিং, লি ছিয়াং, চাও ল্য চ্যি, ওয়াং হু নিং, ছাই ছি, তিং শুয়েই সিয়াং এবং লি শি।
শি জিন পিংকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন : চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিঃসন্দেহে আপনার পুনর্নির্বাচন আপনার নেতৃত্ব, সাফল্য ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর চীন এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের আস্থার একটি উপযুক্ত স্বীকৃতি। সিপিসির ২০তম কংগ্রেসের সফল সমাপ্তির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। শেখ হাসিনা বলেন, সিপিসির প্রথম শতবর্ষের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে একটি মধ্যপন্থি সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করা। এই টার্গেট নিয়েই প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ২০১২ সালে সিপিসির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।বাংলাদেশ অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে। তিনি বলেন, ‘উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক নীতি, জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন দর্শন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার পথে চীনকে একটি নতুন যাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আপনার সংকল্প ও নির্দেশনার তারিফ করি। উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়ন আকাক্সক্ষার প্রতি আপনার অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করি। আমার বিশ্বাস, আপনি এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আরও অবদান রাখবেন।’
২০১৬ সালে শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ সফরকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ রূপান্তর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৯ সালে চীন সফরকালে শি জিন পিংয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠকের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি শি জিন পিংয়ের অব্যাহত সাফল্য ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
এদিকে আজীবন চীনের প্রেসিডেন্ট এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান থাকার রায় পাওয়ায় শি জিন পিংকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা। শি জিন পিংকে পাঠানো অভিনন্দনবার্তায় পুতিন বলেছেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে একটি ব্যাপক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অব্যাহত রাখতে তিনি উন্মুখ। এ ছাড়া আরও যারা অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন তারা হলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাজিদ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, লাওস সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফানখাম, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা, লেবানন সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরি, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রমুখ।