খুলনায় গণসমাবেশের পর থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীর ওপর মামলার খড়গ ঝুলছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচটি মামলায় সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সচল করা হচ্ছে পুরনো মামলাও। সবশেষ গত ২৬ অক্টোবর নগরীর কেডিএ এভিনিউ টাইগার গার্ডেন হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মারপিট করে আহত ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলার বাদী ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। মামলায় সিটি করপোরেশনের দুই কাউন্সিলর বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মনি ও আশফাকুর রহমান কাকন এবং সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম আসাদুজ্জামান মুরাদসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২২ অক্টোবর দুপুরে হোটেল টাইগার গার্ডেনের সামনে বিএনপির মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মারধর, হুমকি, চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর আগে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনায় ২২ ও ২৩ অক্টোবর রেলওয়ে থানায় দুটি, ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও নতুন রাস্তা মোড়ে শ্রমিক লীগ নেতাদের মারপিটের অভিযোগে দৌলতপুর থানায় আরও দুটি মামলা হয়। মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, খুলনায় গণসমাবেশ বানচাল করতে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ পথে পথে বিএনপির কর্মীদের ওপর হামলা করেছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে। তারাই এখন বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি বলেন, দৌলতপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় বিএনপির ১৪ নেতা-কর্মী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু ওই থানার আরেকটি মামলায় শ্যেন এরেস্ট দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের জামিনের জন্য আবারও আবেদন করা হবে। না হলে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হবে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুরনো মামলাগুলোও সচল করা হচ্ছে বলে নেতারা জানিয়েছেন। এদিকে তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে পাশে থাকছেন শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যে হামলায় আহত নেতা-কর্মীদের দেখতে তাদের বাড়িতে ও হাসপাতালে গিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও হামলা-মামলায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, হামলা মামলা করে ভয় দেখিয়ে জনতার আন্দোলনকে দমন করা যায় না। ধারাবাহিক কর্মসূচিতে রাজপথের আন্দোলনে থাকবে খুলনা বিএনপি।