জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রম নিজেদের অধীনে রাখতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশন। ইসি বলছে, নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজটা প্রথম থেকে করে আসছে। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। একটা প্রশিক্ষিত জনবল হয়েছে। এটি ইসির কাছে থাকলে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এটা নিয়ে গেলে সরকারের জনবল এবং টেকনিক্যাল অবকাঠামো করতে হবে। সে জন্য খরচের ব্যাপার আছে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা সুরক্ষা বিভাগে নিতে সরকারের প্রক্রিয়া চলছে। ইসি সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এনআইডি সেবার কাজটি কমিশনে রাখতে সবশেষ গেল অক্টোবরে সিইসির কাছে স্মারকলিপিও দেয়। গতকাল নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে অফিসার্স সমিতি আছে, তারা আমাদের কাছে আবেদন দিয়েছিল। আমরা বলেছি, এটা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেব। এটার অনুলিপি হয়তো সুরক্ষা বিভাগে যাবে এটুকু সিদ্ধান্ত ছিল। কমিশন কী চায়- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা এখানে থাকার কতগুলো ভালো দিক আছে। আবার সরকার নিয়ে যেতে চায়। আমরা চিন্তা করেছি মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেহেতু রাষ্ট্রের প্রধান, আমাদেরও অভিভাবক, সরকারেরও অভিভাবক। উনার কাছে আমরা পাঠিয়ে দেব। উনি যেটা ভালো মনে করেন।’ আলমগীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। এসব চিন্তা করে উনার বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা চাইব (এনআইডি কার্যক্রম) আমাদের কাছে থাকুক। আমরা তো কোনো পক্ষ হতে পারি না। নির্বাচন কমিশন চায় সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। এ জন্য তিনি যা ভালো মনে করবেন সে রকম সিদ্ধান্ত নেবেন। নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজটা প্রথম থেকে করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। একটা প্রশিক্ষিত জনবল হয়েছে। এখানে থাকলে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ নেই। এটা নিয়ে গেলে সরকারের জনবল এবং টেকনিক্যাল অবকাঠামো করতে হবে। সে জন্য খরচের ব্যাপার আছে; এটি সময়সাপেক্ষও।’ ভোটের আগে নিয়ে যাওয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না এত তাড়াতাড়ি নেওয়া সম্ভব হবে।’ নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘অমরা তো ভোটার আইডি কার্ড হিসেবে দিয়েছি। পরে এটাকে নাম দিয়েছি জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে। আমাদের কার্ড যদি সরকার নিয়েই যায় তাহলে সেক্ষেত্রে ওটাকে ভোটার আইডি কার্ড করে ফেলব। দেড় দশক আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজটি নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়েছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনই ছিল এর ব্যবস্থাপনায়। এখন নির্বাচন কমিশনের আপত্তির মধ্যেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনছে সরকার। ১০ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন অনুযায়ী এনআইডির নিবন্ধন প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের কাছে ছিল। নির্বাচন কমিশন থেকে এখন এটা সরকারে নিয়ে আসতে চাচ্ছে।