বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংকটের মধ্যে আবারও দেশে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। এবার মাসিক বিল এক চুলার (সিঙ্গেল বার্নার) জন্য ১৩৭৯ টাকা এবং দুই চুলার (ডাবল বার্নার) জন্য ১৫৯১ টাকা ধার্য করার প্রস্তাব দিয়েছে রাষ্ট্রয়াত্ত এই গ্যাস বিতরণী সংস্থাটি। গত ২ মে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠিয়েছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। এই প্রস্তাবে আবাসিকে মিটারবিহীন এক এবং দুই চুলার গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ৩৯ থেকে ৪৭ শতাংশ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবে গ্রাহকরা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করেন এমন দাবি করে মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করা হয়। এক চুলার ক্ষেত্রে একজন গ্রাহক প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫৫ ঘনমিটার এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৬০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন এমন বিবেচনায় কমিশন সর্বশেষ গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৮ টাকা হিসাবে বর্তমানে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের মাসিক বিল যথাক্রমে ৯৯০ ও ১০৮০ টাকা দিতে হয়। বর্তমানে দেশে মিটারবিহীন গ্রাহকের সংখ্যা ২৫ লাখ ২৫ হাজার। তিতাসের নতুন দাম কার্যকর হলে প্রতি মাসে তাদের বাড়তি আয় হবে ১২৮ কোটি টাকা।

প্রস্তাবের ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, গ্রাহকরা রান্নার পাশাপাশি গ্যাস ব্যবহার করে পানি ফুটায়। অনেক বাসায় আবার সাবলেট ভাড়াটিয়া থাকে। এতে কমিশন নির্ধারিত গ্যাসের চেয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিতাসের এ দাবি একেবারেই অযৌক্তিক। গ্রাহকরা প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন যা কমিশন নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও কম। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সর্বশেষ গণশুনানিতে এটি প্রমাণিতও হয়েছে। বর্তমানে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী চার সদস্যের একটি পরিবারে দুই চুলা ১ হাজার টাকার গ্যাস দিয়ে গড়ে প্রায় দুই মাস চলে অন্যদিকে মিটারবিহীন গ্রাহক গ্যাস ব্যবহার করুক বা নাই করুক দুই চুলার জন্য প্রতি মাসে ১০৮০ টাকা দিতে হয়। অনেক গ্রাহকের বাসায় বেশির ভাগ সময় গ্যাস থাকে না। থাকলেও চাপ খুব কম থাকে। কিন্তু মাসিক বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্যাস স্বল্পতার এ বিষয়টি আমলে নেওয়া হয় না। বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন বলেন, তিতাসের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য কমিশন গ্রহণ করেছে। বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, তিতাস গ্রাহককে ঠকিয়ে মুনাফা করছে। গ্রাহক ঠিকমতো গ্যাস পান না। তিতাসের বিশাল নেটওয়ার্কে হাজার হাজার জায়গায় পাইপলাইন ছিদ্র হয়ে গ্যাস অপচয় হচ্ছে। প্রায় ২৮ লাখ মিটারবিহীন গ্রাহককে নামমাত্র গ্যাস দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করছে তিতাস।

সর্বশেষ খবর