শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

জয়ের প্রতীক্ষায় বাংলাদেশ

মেজবাহ্-উল-হক

জয়ের প্রতীক্ষায় বাংলাদেশ

উইকেট শিকারের পর টাইগার শিবিরে উল্লাস - রোহেত রাজীব

ফলোঅনে পড়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু বোলারদের কথা চিন্তা করে ফলোঅন করায়নি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে টাইগারদের ৩৮২ রানের জবাবে সফরকারীরা মাত্র ১৪৬ রানেই অলআউট। ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করেছে স্বাগতিকরা। সব মিলে লিড ৩৭০ রানের। জয়টা যেন দেখতেই পাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে তবু ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করেছেন টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা শুরু করেন টি-২০ এর গতিতে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারালেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে রানের গতি ছিল ঈর্ষণীয়। প্রথম ৬ ওভারে রান ৪৩, ওভারপ্রতি গড় ৭.১৭। ঠিক যেন টি-২০ এর পাওয়ার প্লে! কাল শেষ পর্যন্ত রানের গড় ছয়ের কাছাকাছি ছিল।

প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত গতকালও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ৬৪ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন তিনি। টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার দারুণ সুযোগ শান্তর সামনে। অর্ধশতক করে অপরাজিত ওপেনার জাকির হোসেন। শান্তর মতো তিনিও ৬৪ বল থেকে ৫৪ রান করেছেন। মিরপুর টেস্টের এখনো তিন দিন বাকি। অলৌকিক কোনো কিছু না ঘটলে এই জয়টা যেন এখন বাংলাদেশের জন্য কেবলই সময়ের ব্যাপার। তবে গতকাল সকালের সময়টা মোটেও বাংলাদেশের পক্ষে ছিল না। আগের দিনের ৩৬২/৫ স্কোর নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ মিনিটের মধ্যে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস, দলীয় খাতায় যোগ হয়েছে আর মাত্র ২০ রান। কাল তো শেষের ৯ রান করতেই ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। যেখানে এক সময় স্কোর ছিল ২৭৩/৫, সেখান থেকে ২৭ মিনিটের এক ঝড়ে ৩৮২ রানে আউট। আফগান তরুণ বোলার নিজাত মাসুদ তার অভিষেকেই ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন। তবে বাংলাদেশকে দ্রুত অলআউট করলেও সময়টা কাজে লাগাতে ব্যর্থ সফরকারীরা। তারাও বাংলাদেশের বোলারদের সামনে ৩৯ ওভারের বেশি টিকতে পারেননি। আফগানিস্তানের ১১ ব্যাটসম্যানের মধ্যে সাতজনই নিজের ইনিংসকে ডাবল ফিগারে নিয়ে যেতে ব্যর্থ। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন আফসার জাজাই। সকালে দারুণ বোলিংয়ের পর আফগানদের ম্যাচে ফেরার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তা নষ্ট হয়ে যায়। ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণে হতাশ আফগান কোচ জোনাথন ট্রট, ‘সকালে আমাদের বোলিং খুবই ভালো হয়েছে। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি।’ গতকাল আফগানরা ফলোঅনে পড়লেও বাংলাদেশ তাদের ফলোঅন করায়নি। এতে নিশ্চয়ই ইনিংস ব্যবধানের জয়ের সুযোগটা হাতছাড়া হয়েছে। তবে ফনোঅন না করানোর পেছনেও আছে দুটি শক্ত যুক্তি। প্রথমত, বোলার এবং ফিল্ডারদের কষ্ট বেশি হতো। টানা বোলিং করা কিংবা ফিল্ডিং করার হাত থেকে রক্ষা। দ্বিতীয়ত, চতুর্থ ইনিংসে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে না টাইগার ব্যাটসম্যানদের। যদিও প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া আফগানদের জন্য ২৩৬ রান করাই অনেক ঠিক ছিল, তারপরও কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। এই টেস্টের নিয়ন্ত্রণ এখন সম্পূর্ণ বাংলাদেশের হাতে। ৩৭০ রানের লিডকে কত দূর নিয়ে যেতে পারেন কিংবা কখন ইনিংস ঘোষণা করে সেটাই দেখার বিষয়!

সর্বশেষ খবর