শিরোনাম
রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

৩০০ আসনেই প্রস্তুতি জাতীয় পার্টির

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০০ আসনেই প্রস্তুতি জাতীয় পার্টির

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আপাতত এককভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে গত নির্বাচনে ভোট করলেও জি এম কাদের প্রায় প্রতিদিন সরকারের কঠোর সমালোচনা করছেন। বলছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব না। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকবে, না জাতীয় পার্টির নেতৃত্বেই কোনো জোট, নাকি রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা- বিষয়টি স্পষ্ট হবে নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি অনুযায়ী। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনী পরিস্থিতি এখন অনিশ্চিত। আপাতত আমরা ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রার্থী ঠিক করছি। জাতীয় নির্বাচনে জোট, না এককভাবে অংশ নেব তা অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’ জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেনি জি এম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ‘চলমান বিরোধিতা’ কোন দিকে গড়াবে, এ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা। জাপার একাধিক কো-চেয়ারম্যান বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি খানিকটা ঘোলাটে। নির্বাচন সামনে রেখে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক শক্তির অবস্থান নিয়ে খানিকটা সন্দিহান জাপা। আর এ কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোন প্রক্রিয়ায় হবে, এ নিয়ে নীতিনির্ধারকরা এখনই সিদ্ধান্তে আসতে নারাজ। এ ছাড়া জাপার চিফ প্যাট্রন রওশন এরশাদের অবস্থান শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায় সেদিকটিও আমলে রেখেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।

জাপার একাধিক সংসদ সদস্য এবং শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারক জানান, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টি থাকলেও আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রকাশ্য হিসাব কিছুটা ভিন্ন। যোগ্য প্রার্থী সংকটের মধ্যেও সারা দেশে ৩০০ আসনে একক নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। পাশাপাশি সরকারি দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনের পথও খোলা রাখছে। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করলে কমপক্ষে ১০০ আসন চাইতে পারে দলটি। অন্যদিকে বিএনপির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংসদ সদস্যরা বলছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার জোট শরিক দলগুলোকে ৪৫টি আসন ছাড় দেয়। এর মধ্যে জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হয় ২৯টি আসন। এর মধ্য থেকে ২২ জন নির্বাচিত হন। বাকি চারজন সংরক্ষিত নারী সদস্য। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে এবার আরও বেশি জোটগত মনোনয়ন পাওয়া যাবে বলে দলীয় নেতাদের অভিমত। তারা বলছেন, দলের সাংগঠনিক অবস্থা বিবেচনায় ৩০০ আসনের মধ্যে ৫০ জন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা কষ্টসাধ্য। ৫০ জন একক নির্বাচনে অংশ নিলে কয়টি আসন পাওয়া যাবে তা দলের শীর্ষ নেতারা অবগত রয়েছেন। তাই পার্টির একটি বড় অংশ চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিসহ তাদের সমমনাদের আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম কাটিয়ে উঠতে পারে, তাহলে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে দেনদরবার করে যত আসন নেওয়া যায়, ততই নিরাপদ। আর বিএনপি আন্দোলন করে সফল হলে জাতীয় পার্টির অবস্থান মোড় নেবে অন্য দিকে। সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অবস্থান কী হবে তা চূড়ান্ত হবে শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি অনুযায়ী।

সর্বশেষ খবর