সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

উঠল ৯ শতাংশ সুদহার সীমা

মুদ্রানীতি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ সরবরাহ কমিয়ে টাকার মান বাড়াতে সুদহার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে বহুল আলোচিত ঋণের সুদহারের ৯ শতাংশ সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে বাড়ানো হয়েছে সরকারি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা। বেড়েছে রেপো-রিভার্স সুদহার। ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বরের-২০২৩ মুদ্রানীতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর-২০২৩ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর আবদুুর রউফ তালুকদার। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে নতুন মুদ্রানীতির সারমর্ম তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর         রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশরসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, বিশ্বব্যাপী বর্তমানে চার ধরনের লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক মুদ্রানীতি প্রচলিত আছে। সুদহার, মূল্যস্ফীতি, মুদ্রা সরবরাহ এবং বিনিময় হার টার্গেটিং। বাংলাদেশ ব্যাংক এত দিন ‘মূল্যস্ফীতি টার্গেটিং’ মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে আসছিল। এবার ‘সুদহার টার্গেটিং’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। মুদ্রানীতিতে এটা কাঠামোগত পরিবর্তন বলা যায়। আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, নতুন মুদ্রানীতিতে টাকার চাহিদা কমাতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ঋণের সুদহারের যে ৯ শতাংশ ক্যাপ ছিল তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চাহিদা, আমদানি কার্যক্রমে নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়েছে। স্থিতিশীল বাণিজ্য পরিবেশ নিশ্চিতকরণসহ প্রভৃতি বিষয়গুলোতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। রেপো সুদহার বাড়িয়ে ৬.৫ শতাংশ ও রিভার্স রেপোর সুদহার বাড়িয়ে ৪.৫ শতাংশ করার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ৪৩ শতাংশ, যেটি আগের অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ১০.৯ শতাংশ, যেটি বিগত অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ১১ শতাংশ । ইডিএফ সুদহার ৪.৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন সুদহার ব্যবস্থা হলো ‘স্মার্ট’ তথা শর্ট টার্ম মুভিং এভারেজ রেট। ১৮২ দিন মেয়াদি সরকারি ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় সুদের সঙ্গে আপাতত সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ করিডর বা সীমা দেওয়া থাকবে। বর্তমানে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ৭ শতাংশের নিচে রয়েছে। অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১০ শতাংশের আশপাশে।

তিনি জানান, নীতি সুদহার ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদহারের করিডর প্রথা চালু হচ্ছে। এখন স্পেশাল রেপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ), নীতি সুদ ও রিভার্স রেপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ)। আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর