সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুলিশ সদস্য খুন হন ছিনতাইকারীর হাতে, গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরে ছুরিকাঘাতে পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদারের মৃত্যুর ঘটনায় চার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত শনিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হলেও নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে এদের একজন সরাসরি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অন্যরা এর সঙ্গে জড়িত কিনা, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গতকাল এসব তথ্য জানান ডিবির তেজগাঁও  বিভাগের উপ-কমিশনার মো. গোলাম সবুর। তিনি বলেন, ছিনতাইকে কেন্দ্র করে মনিরুজ্জামানকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে তিন-চারজন জড়িত ছিলেন, যারা সবাই ছিনতাইকারী। এর আগে, গত শনিবার ভোরে ঢাকায় ফিরে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ফার্মগেটের সেজান পয়েন্ট মার্কেটের সামনে ছুরিকাঘাতের শিকার হন মনিরুজ্জামান। গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। পরে ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক জানান, ফার্মগেট দিয়ে মোহাম্মদপুরে তেজগাঁও ট্রাফিক অফিসে যাওয়ার সময় সেজান পয়েন্টের সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। ঘটনার সময় মনিরুজ্জামান সাধারণ পোশাকে ছিলেন। তিনি তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী থানার করুয়ায়। কোরবানির ঈদের ছুটি শেষ করে শনিবার ঢাকায় ফিরে কর্মস্থল তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগে যাচ্ছিলেন তিনি। এদিকে, মনিরুজ্জামান খুন হওয়ার ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে তেজগাঁও থানার এসআই মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ওই এলাকায় টহল ডিউটিতে ছিলেন। জানা গেছে, গ্রেফতার চারজনের মধ্যে একজন হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার নাম জয়নাল। মনিরুজ্জামানের ফুফাতো ভাই জাকিরুল আলম জানান, মনিরুজ্জামানের স্ত্রী রুমি বেগম, দুই ছেলে আবদুল্লাহ ও রহমান ও মা-বাবা গ্রামের বাড়ি শেরপুরে থাকেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম তালুকদার ও মা মোরছেদা বেগম। মনিরুজ্জামান ২০০২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। মনিরুজ্জামানের বাবা মো. আবুল কাশেম তালুকদার বলেন, আমার ছেলে ২১ বছর ধরে পুলিশে কর্মরত। ঈদের ছুটিতে সে বাড়ি এসেছিল। শুক্রবার রাতে একসঙ্গে খাবার খেয়ে আমার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে সে ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে রওনা দেয়।

শনিবার সকালে শুনি সে আর নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাই। মনিরুজ্জামানের মা মোরছেদা বেগম বলেন, আমার ছেলের স্ত্রী ও দুই সন্তান আছে। খুব কষ্ট করে সে নতুন একটা হাফ বিল্ডিং বাড়ি করেছে। ওই বাড়িতেও পোলাডা উঠতে পারল না। সরকারি চাকরিজীবীকেও তারা কেমন করে মেরে ফেলল। আমার বাবাটারে যারা মারছে তাদের বিচার চাই।

 

 

 

সর্বশেষ খবর