বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

১১ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

তেলের জাহাজ বিস্ফোরণ তদন্তে তিন কমিটি

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী জাহাজ সাগরনন্দিনী-২-এ লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে ১১ ঘণ্টা পর। গতকাল ভোর ৫টায় আগুন পুরোপুরি নেভে। আগুনে দগ্ধ হয়ে ও নদীতে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন ১২ পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন।

কোস্টগার্ড অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. শাফায়েত বলেন, দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণের সময় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ সেখানে ছিল। বিস্ফোরণ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে পারছিল না। এ ঘটনায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ পরিদর্শন, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানান, সাগরনন্দিনী-২ থেকে জ্বালানি তেল খালাসের সময় প্রচ- তাপে সাবমারসেবল পাম্প বিস্ফোরণ হয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন ধরে যায়। ঢাকা থেকে আগত ইউনিটসহ ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাদের সহযোগিতা করে কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ। বিস্ফোরণের পর রাতভর আতঙ্কে ছিল সুগন্ধা নদীতীরের বাসিন্দারা। এমন আগুন তারা আগে কখনো দেখেনি। শহরেই সুগন্ধা নদীর তীরে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির তিনটি ডিপো রয়েছে। এতে প্রতিদিন পাঁচ-ছয়টি জাহাজ ভিড়ে জ্বালানি তেল খালাস করে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানান, বিস্ফোরণে দগ্ধ পুলিশ কনেস্টবল শওকত জামিল (২৩) ও জাহাজের স্টাফ মো. শরীফকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ পুলিশ সদস্য দীপ (২৩) বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ছাড়া এসআই আবদুল হাকিম (৫০), এসআই গণেশ (৪২), কনস্টেবল লিপন গাইন (২৮), সাইফুল (৩০), নকিব (৩০), মেহেদী (২৭), পলাশ (২৫), বরিশাল নৌপুলিশের নায়েক সিদ্দিক, এসআই মোস্তফা কামাল (৪৩) ও এটিএসআই হেলাল উদ্দিনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাহাজের স্টাফদের অসাবধানতায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ঝালকাঠির নৌরুট নিরাপদ এবং নৌ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জ্বালানি সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার গতকাল ঝালকাঠি পৌর মিনি পার্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ বের করার জন্য বিস্ফোরক অধিদফতরের মহাপরিচালককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ থেকে প্রায় ৭ লাখ লিটার তেল পদ্মা ডিপোয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। জাহাজে এখন কী পরিমাণ জ্বালানি তেল রয়েছে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। পরিত্যক্ত তেল অপসারণে জেলা প্রশাসক তার তত্ত্বাবধানে ব্যবস্থা নেবেন। পাশে থাকা ডিজেলভর্তি জাহাজটি নিরাপদে ডিপোয় নেওয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঝালকাঠিতে নৌ ফায়ার স্টেশন স্থাপনে সুপারিশ পাঠানো হবে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি। পরে তিনি সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ অগ্নিকান্ডের খোঁজখবর নিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর