রাজশাহীর গোদাগাড়ীর পাকড়ি ইউনিয়নের মুসরাপাড়া ইয়াজপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও সাতজন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, সকাল ৯টায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। যাদের মধ্যে ১০ জনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন- রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভাটাপাড়ার জিল্লুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা ছোটন (৪৫), গোদাগাড়ীর বড়গাছী কানুপাড়া গ্রামের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে মেহের আলী (৭০) ও তার বড় ভাই নাইমুল (৮০)। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন- সোলেমান (৬৫), ইউনুস (২২), মো. আমু (২২), মো. রায়হান (৩৫), মো. মনিরুল (৪৫), মো. সুলায়মান (৫০) ও রজব (৩৫)। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, ইয়াজপুর বিলে সোহেল রানা ছোটনের ১৪ বিঘা জমি আছে। মেহের আলী ও নাইমুল দুই ভাই জমিগুলো বর্গা চাষ করেন। ওই জমিগুলো বেশ কিছুদিন থেকে নিজের দাবি করে আসছেন পাকড়ি গ্রামের আশিক আলী চাঁন। সকালে চাঁন তার দলবল নিয়ে ওই জমি দখলে নিতে চাষ করতে যান। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। নিহত মেহের আলী ও নাইমুল আলীর ছোট ভাই আনসুর রহমান বলেন, আশিক আলী চাঁন জমিগুলো নিজের দাবি করে আসছিল। তিনি বিএমডিএতে চাকরি করেন। তিনি জমি দখল করার জন্য ভাড়াটে হিসেবে জালাল উদ্দিন ও তার দলবল নিয়ে যান। জালাল উদ্দিন পাকড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। জালাল উদ্দিন নিজে নেতৃত্ব দেন ওই হামলায়। তারা তিনজনকে ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করে। যারা উদ্ধার করতে যায় তাদেরও তারা পিটিয়ে আহত করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল আগে থেকেই। সোমবার সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। আর মূলত এটি সেই অর্থে সংঘর্ষও নয়। যাদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে, তাদের বয়স দেখেন-তারা বয়োবৃদ্ধ! একজনের বয়স ৭০, আরেকজনের ৮০ বছর। মূলত এটা হামলা হয়েছে। প্রতিপক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে এই হামলা চালিয়েছে। আর অপরপক্ষ পুরোপুরি অপ্রস্তুত ছিল। তাই তারাই বেশি হতাহত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিরাও ধরা পড়বে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
