শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ফেসবুকে অপপ্রচার ঠেকাতে ইসিকে সহায়তায় মেটা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ফেসবুকে ‘সাম্প্রদায়িকতা, বিদ্বেষ ও সহিংসতা’ ছড়ানো কনটেন্ট ঠেকাবে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি মেটা। গতকাল ফেসবুকের এই মূল প্রতিষ্ঠানের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করে। বৈঠকে নির্বাচনের সময় ফেসবুকে নানা ধরনের অপপ্রচার রোধে মেটার ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও ভোটের কয়েক সপ্তাহ আগে ২৪ ঘণ্টা একটি টিম ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচন কেন্দ্র করে গুজব ও অপপ্রচার রোধে কাজ করেছে। গতকাল সভা শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আমরা ফেসবুকের একটি টিমের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমাদের যে টেকনিক্যাল লোক আছে, তাদের নিয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসেছিলাম। কারণ এখানে কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার ছিল। মূলত ব্যাপারটা ছিল ফেসবুকে যেসব অপপ্রচার হয়, সেই অপপ্রচারগুলো কীভাবে রোধ করা যায়। বিশেষ করে ঘৃণাসূচক মন্তব্য, সাম্প্রদায়িকতা বা অন্য যেসব ভায়োলেশন হয়। সেগুলো তারা (মেটা) ডিলিট করবে, রিমুভ করে দেবে, ব্লক করবে। মূলত এই ছিল মিটিংয়ের বিষয়।’ নির্বাচন ভবনের ওই বৈঠকে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের নেতৃত্বে আইডিইএ-২ প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মো. সায়েম, এনআইডি সিস্টেম ম্যানেজার মো. আশরাফ হোসেন বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশে মেটার হেড অব পাবলিক পলিসি রওজন সারওয়ার, হেড অব এপিএসি গ্লোবাল রেসপন্স আইদান হয় এবং রেগুলেটরি স্পেশালিস্ট ইউজিন পোহ উপস্থিত ছিলেন। মেটার প্রতিনিধি দলটি পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁরা কোনো কথা বলেননি। মেটার সঙ্গে গতকালের আলোচনাটি প্রাথমিক পর্যায়ের ছিল বলে জানান অশোক কুমার দেবনাথ। বলেন, পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের একজন ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য। তাঁরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। এ বছরের ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তফসিল ঘোষণা হবে অক্টোবরের পরে। অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, তফসিল ঘোষণার পর ইসির সহায়তায় মেটা তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। আমাদের কাছে যেটা নেগেটিভ প্রতীয়মান হবে, আমরা তাদের জানাব; তারা সেটা রিমুভ করে দেবে। শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন কনটেন্ট বিষয়ে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তফসিল ঘোষণার পর এ কার্যক্রম শুরু হবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের আগ্রহেই এ সভা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আমরা না, ফেসবুক কর্তৃপক্ষই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারাই আমাদের কাছে সময় চেয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে মিটিং হলো।’ ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় অপপ্রচার ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করার কথা জানিয়েছিল। ভোটের কয়েক সপ্তাহ আগে ২৪ ঘণ্টা একটি টিম ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচন কেন্দ্র করে গুজব ও অপপ্রচার রোধে কাজ করে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ওই টিমে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ, র‌্যাব, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে একজন করে প্রতিনিধি ও নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর