মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভয়াবহ পরিকল্পনায় সরকার : ফখরুল

২৫ আগস্ট ঢাকায় গণমিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটিয়ে নির্বাচনে কীভাবে বিরোধীদের সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা যায়, সেই পরিকল্পনা করছে সরকার; যেমন আগের দুটি নির্বাচনে করেছে। সেই লক্ষ্যেই তারা এগোচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৫২ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্ত। গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুরো বিষয়টাই (বিচার প্রক্রিয়া) সাজানো নাটক।’ তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের নাম এফআইআরে ছিলই না। তিনবার এফআইআর হয়েছে, তার মধ্যে একবারও তার নাম ছিল না। এর পরে একজন ব্যক্তি, যিনি আগে রিটায়ার্ড করেছিলেন, কাহার আখন্দ, যিনি আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন চেয়েছিলেন, তাকে নিয়ে এসে পুনরায় চাকরি দিয়ে এ মামলার আইও করা হয় তাকে। সেই ভদ্রলোক তখন তারেক রহমানের নাম সেখানে দিলেন।’ ফখরুল আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের নাম কোথাও উচ্চারিত হয়নি পুরো ইনভেসটিগেশনে। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হয়েছিল, তাকে প্রায় ১৪৫ দিন আটক করে রাখার পরে, রিমান্ডে নেওয়ার পরে। মুফতি হান্নান কিন্তু সেটাকে অস্বীকার করে আবার এফিডেভিট দিয়েছিলেন, সেটা গ্রহণ করা হয়নি। আর তড়িঘড়ি করে যাতে সে কোর্টে গিয়ে কিছু বলতে না পারে; অন্য একটা মামলায় ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, ইতোমধ্যে তার ফাঁসি কার্যকর করে তাকে আর কোর্টে আসার সুযোগই দেওয়া হলো না। তাহলে এটাকে আমরা কী বলব?’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে, বিএনপি নেতাদের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে। পুরোপুরি এ বিষয়টার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এ কাজটা করা হয়েছে। আমরা বারবার বলে এসেছি, একটা নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আমরা ২১ আগস্টের ঘটনার নিন্দা জানাই।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

২৫ আগস্ট ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি : সরকার পতনের এক দফাসহ গ্রেফতার নেতাদের মুক্তি দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে ২৫ আগস্ট ঢাকায় ফের গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। পর দিন ২৬ আগস্ট ঢাকাসহ সারা দেশে পদযাত্রা বা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে পারে দলটি। রবিবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে এই কর্মসূচির ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এদিন প্রতিটি থানায় গণমিছিলের আয়োজন করবে। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে জেএসডির আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে শনিবার একই স্থানে গণ অধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া), গণ অধিকার পরিষদ (নূর), গণফোরাম (মন্টু) ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি) এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করে বিএনপি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে চলমান এক দফার আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে ছাত্র, শ্রমিক ও পেশাজীবী সংগঠনকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তাদের স্ব-স্ব ব্যানারে আন্দোলনে নামানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে যুগপৎ শরিক দলগুলোর ছাত্র, শ্রমিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় পৃথক কনভেনশনের কথা ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিচারাঙ্গনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের শেষ ধাপে এই কর্মসূচি আসতে পারে।

সর্বশেষ খবর