ঢাকা মহানগরকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে আইন লঙ্ঘনকারীদের কঠোর জরিমানা করার পরামর্শ দিয়েছেন হাই কোর্ট। আদালত বলেছেন, যারাই অনিয়ম করবে, আইন লঙ্ঘন করবে, তাদের ওপর জরিমানা আরোপ করতে হবে। তাহলে আইন লঙ্ঘনকারীরা সঠিক পথে আসবে, যেমনটা বিদেশে হয়। গতকাল ঢাকার ফ্লাইওভারের সৌন্দর্য রক্ষা-সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানির জন্য ওকালতনামা দেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। শুনানির শুরুতে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, আমাদের নির্দেশ ছিল ফ্লাইওভারে যারা পোস্টার লাগিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের। পাশাপাশি ওইসব পোস্টার সরানোরও নির্দেশনা দেওয়া ছিল। কিন্তু সে আদেশের কার্যকারিতা কোথায়? এ পর্যায়ে আইনজীবী মেজবাহুর রহমান বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় মগবাজার ফ্লাইওভার পড়েছে। এটা আমরা দেখভাল করি। এরই মধ্যে ফ্লাইওভারের লাইটিং ব্যবস্থা সচলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এ পর্যায়ে হাই কোর্ট বলেন, শুধু পদক্ষেপ নিলে হবে না, দেখভাল করতেও হবে। আর মেয়রের পক্ষে তো মাঠে গিয়ে সবকিছু মনিটর করা সম্ভব নয়। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, আমি তো মগবাজার ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করি। যাতায়াতের সময় দেখতে পাই বিভিন্ন স্থানে ময়লা জমা করে রাখা হয়েছে। এগুলো যাদের পরিষ্কার করার দায়িত্ব তারা করছেন না। এদের যারা মনিটর করবেন তারাও প্রয়োজনীয় নজরদারি করছেন না। যদি মাঠকর্মীদের ওপর নজরদারি থাকত, তাহলে এই শহরে ময়লা পড়ে থাকত না। মনজিল মোরসেদ বলেন, পোস্টার লাগানোর অপরাধে জরিমানা করা উচিত। প্রতি পোস্টারের জন্য ১০ টাকা করে জরিমানা করলে যেখানে সেখানে পোস্টার লাগানো বন্ধ হয়ে যেত। এ সময় হাই কোর্ট বলেন, এগুলো বন্ধে আইন অনুসরণ করতে হবে। আর কিছুর দরকার নেই। যারাই আইন লঙ্ঘন করবে তাদের জরিমানার আওতায় আনুন, দেখবেন সবকিছু নিয়মের মধ্যে চলে আসবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাই কোর্ট। আদালত বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী কোথায়? তাদের কি এসব বিষয়ে মাথাব্যথা নেই? এরপরই হাই কোর্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করে দেন।
