শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা

১৬০ ব্যক্তির সেই বিবৃতি প্রত্যাহার চায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত চেয়ে বিশ্বের ১৬০ বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে উপাচার্যদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগকে না জেনে, যথাযথ পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিবৃতি বা চিঠি প্রদান স্বাধীন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের ওপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ, যা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সবকিছু আইন অনুসারে পরিচালিত হয়। স্বাধীন বিচার বিভাগ সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং এ ক্ষেত্রে কারও কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। সংবিধান অনুসারে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা ও স্বাধীন। অর্থাৎ বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে, নির্বাহী বিভাগ এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। উপাচার্যগণ বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করছি যে, দেশে আইনের শাসন বিদ্যমান এবং কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ : অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে চলমান মামলা স্থগিত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীলসমাজের ১৬০ ব্যক্তির চিঠির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকে। কাজেই এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষণীয় যে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিবর্গ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষায় আগ্রহী হলেও শ্রমিকদের মানবাধিকার ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চুপ থেকেছেন। এ ধরনের বিবৃতি আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকারসংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তা ছাড়া একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এ ধরনের বিবৃতির পেছনে গোপন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

সর্বশেষ খবর