শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে আসছে নতুন বিনিয়োগ

আলী রিয়াজ

বড় বিনিয়োগ আসছে শেয়ারবাজারে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিনিয়োগ নিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন মন্দার বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে সংস্থাটি। শেয়ারবাজারে ডিবেঞ্চার, করপোরেট বন্ড এবং মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটে ব্যাংকের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক্সপোজার লিমিট থাকছে না। এখন থেকে বন্ড, ডিবেঞ্চার ও ইসলামিক শরিয়াহ ভিত্তিক সুকুকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো সীমা থাকবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল জারি করা নতুন নীতিমালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ঘোষণায় শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলো প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর জাপান, কাতারসহ একাধিক দেশে রোড শোর আয়োজন করে বিএসইসি। দেশগুলো থেকে বিনিয়োগ আসা শুরু হয়েছে চলতি মাস থেকে। এ বছর অক্টোবরে ইউরোপের একটি দেশে রোড শোর আয়োজন করা হচ্ছে। এই রোড শো থেকে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ আসছে শেয়ারবাজারে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ১৭ আগস্ট বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানায় সংস্থাটি। বৈঠকে অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজারের কর্মকর্তারা শেয়ারবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডকে আরও জনপ্রিয় করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দেন তারা। ডলারের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারী ফিরে আসতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে কেনার চেয়ে বেশি পরিমাণ বিক্রির পর এবার শেয়ারবাজারে শেয়ার কিনতে সক্রিয় হয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজারে কোম্পানিগুলোর অবন্টিত লভ্যাংশ দিয়ে যে তহবিল করা হয়েছে, সেখান থেকে অর্থ দিয়ে বাজারে বিনিয়োগ করা হবে। সিএমএসএফ নামে গঠিত এই তহবিলের বড় অংশ বিনিয়োগ করা হবে বাজারে। পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল বা সিএমএসএফ বিনিয়োগ করবে আইসিবি। এর জন্য সিএমএসএফ টাকা দেবে। এ ছাড়া আগামী অক্টোবরে ইউরোপের একটি দেশে রোড শোর আয়োজন করেছে বিএসইসি। ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে এই রোড শোর আয়োজন করা হয়েছে। রোড শোর সরাসরি রেসপন্স পাবেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। রিটেইলারদের কাছ থেকে তারা ভালো সাড়া পাচ্ছেন। বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বড় বিনিয়োগকারীরাও আলোচনা শুরু করেছেন। ফল পেতে ছয় মাসের মতো সময় লাগবে। তবে রিটেইলাররা এরই মধ্যে বিনিয়োগ করা শুরু করেছেন। চলতি বছর জাপান ও কাতারে অনুষ্ঠিত রোড শোর আয়োজন করা হয়। ওই রোড শোর বিনিয়োগ ইতোমধ্যে বাজারে আসা শুরু হয়েছে। দেশের বাইরে রথকেও তহবিল আসতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘রোড শোর সরাসরি রেসপন্স আমরা পাব না। রেসপন্স পাবেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। বড় বিনিয়োগকারীরাও আলোচনা শুরু করেছেন। এর সুবিধা পেতে কিছুটা সময় লাগবে। অতি দ্রুত বাজারে আমরা একটি ইতিবাচক বড় প্রভাব দেখতে পাব। বাজারের তারল্য সংকট কেটে যাবে। বিনিয়োগকারীরাও ভালো লভ্যাংশ পাবেন।’ তিনি জানান, শেয়ারের মূল্য ও সূচক বাড়ার পর সংশোধন হচ্ছে। এক খাত উত্থানে গেলে অন্য খাতে সংশোধন হচ্ছে। এ কারণে সূচকে প্রভাব পড়ছে না সেভাবে। তারল্য সংকটের সমাধান হচ্ছে দুইভাবে। শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আটকে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগযোগ্য হয়েছে। নিয়মিত কেনাবেচা করতে পারছেন তারা। আবার আসছে নতুন ফান্ড। বিএসইসি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতেও জোর দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর