ব্যাংকগুলোর করপোরেট গভর্ন্যান্সের যাবতীয় নীতিমালা মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার কারসাজি রোধে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের কড়া বার্তা দিয়েছেন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর এই তাগিদ দেন। বৈঠকে বিএবি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আমন্ত্রণেই বিএবির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি চাপ, রিজার্ভ পরিস্থিতি, ডলার, এক্সচেঞ্জ রেট এবং আমদানি-রপ্তানি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলো তাদের জানানো হয়েছে। পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিএবির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

গভর্নর ব্যাংকগুলোর করপোরেট গভর্ন্যান্স মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, দেখা যাচ্ছে বাফেদার বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে গিয়ে অনেকে ডলার কেনাবেচা করছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না। এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব লাগছে। বৈঠকে এসব বিষয় সমাধানে করপোরেট গভর্ন্যান্স মানতে বলা হয়েছে। ডলার কারসাজিতে অভিযুক্তদের কী শাস্তি হবে- জবাবে মুখপাত্র বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯(৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা আছে।

এই অপরাধে কমপক্ষে ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। যদি আইনের একই ধারার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রথম দিনের পর প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা যায়।

বিএবি ও বাফেদা মিলে রপ্তানি ও প্রবাস আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী, পণ্য বা সেবার রপ্তানি ও প্রবাস আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। অন্যদিকে আমদানিকারকদের কাছে এখন ১১০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু ব্যাংক প্রতি ডলারে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা দাম নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।