বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রতিনিধি দল আসছে ৭ অক্টোবর

চোখ মার্কিন প্রাক-নির্বাচন মিশনে

সপ্তাহব্যাপী বৈঠক হবে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সুশীল সমাজ ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বিশেষ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে হবে এই প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশন। আগামী ৭ অক্টোবর শুরু হবে সপ্তাহব্যাপী এই মিশন। এই মিশনের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করবে নির্বাচনের দিন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আসবেন কি না। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ও পদক্ষেপের মধ্যে এই প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশনের দিকে দৃষ্টি রাখছে দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

সূত্র জানায়, মূলত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এর ছয় প্রতিনিধির সমন্বয়ে পরিচালিত হবে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল এফ ইন্ডারফার্থ এই মিশনে নেতৃত্বে থাকবেন। প্রতিনিধি দলে আরও থাকবেন ইউএসএআইডির প্রাক্তন ডেপুটি (প্রশাসক) বনি গ্লিক, মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য মারিয়া চিন আবদুল্লাহ, মার্কিন রাষ্ট্রপতির প্রাক্তন সহযোগী পরামর্শদাতা জামিল জাফর, এনডিআইর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ এবং আইআরআইর এশিয়া-প্যাসিফিক ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জোহানা কাও। ৭ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তারা ঢাকায় অবস্থানকালে যৌথ প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এই মিশন সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার সাংবাদিকদের বলেছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক পর্যবেক্ষক, নারী ও যুব সংগঠনসহ সুশীল সমাজ, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা। সফর শেষে প্রতিনিধি দলটি ইতিবাচক বিষয়গুলোর পাশাপাশি উদ্বেগের ক্ষেত্রগুলো ও বাস্তবসম্মত সুপারিশগুলো তুলে ধরে একটি পাবলিক বিবৃতি জারি করবে। প্রতিনিধি দলসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডার, ওয়াশিংটন ডিসির নীতিনির্ধারক এবং বাংলাদেশের নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনে স্বচ্ছতায় সমর্থনকারীদের সঙ্গে ধারাবাহিক ব্রিফিং ও পরামর্শ করবে। প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশনের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি ও নির্বাচনী প্রেক্ষাপট সম্পর্কে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তথ্য সরবরাহ করা। নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে তাদের যদি কোনো উদ্বেগ থাকে তা জানাবে এবং বাস্তবসম্মত সুপারিশ থাকলে তা-ও উল্লেখ করবে। তবে নির্বাচনের দিন সীমিত আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানো হবে কি না তাও নির্ধারণ করা হবে।

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্র গত মে মাসে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে এই ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফর করে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

সর্বশেষ খবর