বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদেরের শেষ বার্তা

আবারও শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে গতকাল শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বার্তা দিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। আমি তাকে শেষ বার্তা দিয়ে গেলাম, নির্বাচনকালীন সরকারে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। আরও বার্তা দিচ্ছি, আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আবারও শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন। 

গতকাল বিকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। বেলা ৩টায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না পুরো এলাকা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নাকি ঢাকা অবরোধ করবে। ওদের পাল্টা অবরোধ করা হবে। দাঁড়াতে দেব না। আমাদের শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে আমেরিকান বন্ধুরা ওদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয় সেটাও আমরা দেখব। তিনি বলেন, বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার হাতিরপুলে শুয়ে আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মৃত, আর ফিরে আসবে না। মির্জা ফখরুলের পকেট গরম। মাল-পানির ভালোই সরবরাহ। পকেট গরম, কথাও গরম, হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আমাদের ধমক দেয়, আমাদের ভয় দেখায়। আমাদের বার্তা দিচ্ছে, দিনক্ষণ বলে দিচ্ছে কবে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। আমি ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, আজ নয়, কাল- এভাবে বলবেন না। বলুন কখন শেষ বার্তা। আপনি বার্তা দেওয়ার কে? তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন আর সফল হবে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম উৎসাহিত। পশ্চিমারা নাকি উৎসাহ দিচ্ছে, উনি উৎসাহিত হচ্ছেন। মির্জা ফখরুল সাহেব, পশ্চিমাদের অবস্থা ভালো নেই, যাদের কথা বলছেন, তাদের ঘর সামলানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের চারপাশের অশান্তি সামাল দিতে পারছে না। তারা ঘর সামলাবে না এখানে এসে আপনাদের উৎসাহ দেবে। খেলা হবে, এই খেলায় জিততে হবে। তারা নাকি রাস্তায় নামবে। দাঁড়াতেই দেব না।

খেলা হবে স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপি হলো খুনির দল। এদের হাতে ১৫ আগস্টের রক্ত, শেখ রাসেলের, শেখ মুজিবের রক্ত, এদের হাতে জাতীয় চার নেতার রক্ত, ২১ আগস্টের রক্ত। এরা শতসহস্র মায়ের বুক খালি করেছে। সন্তানহারা মায়েদের কান্নায় বাংলার আকাশ বাতাস ভারী করে তুলেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীকাল দেড় শ সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা থাকলেই শান্তি আসবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পাবে, আলো পাবে। আগে শুধু খাম্বা ছিল, বিদ্যুৎ ছিল না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপির সমাবেশের উদ্দেশ্য হলো- আগামী দিনে শেখ রাসেলের মতো কাউকে খুনের পরিকল্পনা করার সমাবেশ। পূজার পরে দেশে বিশৃঙ্খলা করতে ওরা অস্ত্র জোগাড় করছে, বোমা তৈরির কারখানা বানাচ্ছে। পূজার পরে আমরাও মাঠে নামব। প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থেকে আমরা বিএনপিকে মাঠে নামতে দেব না। ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনা দেশে যে উন্নয়ন করেছেন তাতেই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার।

প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াত খুনিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ, সমঝোতা নয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধান মেনে নির্বাচন হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, অবরোধ দিয়ে অশান্তি, অস্থিরতা তৈরি করতে চায় তারা। এসবের দাঁতভাঙা জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত আছি। প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বলেন, বিএনপি এখন পাকিস্তান আর আমেরিকার ওপর নির্ভর করছে। আমরা জনগণের ওপর নির্ভর করি।  বিএনপিকে ‘খুনি শক্তি’ অভিহিত করে প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, তারা পূজার পর ১০ লাখ লোক নিয়ে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ওরা যদি কর্মসূচি দেয়, সেদিন ব্যানার নিয়ে নয়, বঙ্গবন্ধুর সেই সাড়ে তিন হাত লাটি নিয়ে মাঠে থাকার আহ্বান জানান তিনি। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বিদেশি শকুন দেশে নিয়ে আসতে চায়। জনগণের দিকে ওরা তাকায় না। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি। সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সহসভাপতি সাদেক খান এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, নাজিমুদ্দিন, মাহবুবুর রহমান হিরণ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা পলি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপি, ডা দিলীপ কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর