সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ

সাজা স্থগিত থাকলেও দন্ডিতরা নির্বাচনে অযোগ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাজা স্থগিত থাকলেও দুই বছরের বেশি কারাদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হবেন। একটি দুর্নীতি মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণই দিয়েছেন হাই কোর্ট। আদালত বলেন, আপিল বিচারাধীন থাকা মানে দন্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ নন।

উপযুক্ত আদালত কর্তৃক সাজা বাতিল হলে দন্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ হবেন। দন্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানসহ দলটির পাঁচ নেতার দুর্নীতির পৃথক মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দন্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে ২০১৮ সালে এ রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সেই রায়ের ৪৪ পৃষ্ঠা পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে হাই কোর্ট বলেন, সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দুই বছরের বেশি কারাদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, সংবিধানের ৬৬ (২) (ডি) এর ব্যাখ্যা দিয়ে হাই কোর্ট আদেশ দিয়েছেন। সেই আদেশে বলা হয়েছে, সাজা কখনো স্থগিত হয় না। দুর্নীতি মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন ব্যক্তি আপিলে সাজা স্থগিতের একটা আবেদন করেছিলেন। কারণ সাজা স্থগিত না হলে তারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সেটার বিষয়ে হাই কোর্ট ডিভিশন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ইন্ডিয়ান সুপ্রিম কোর্ট ও বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে মূল কথা হলো, যখনই কোনো ব্যক্তির দুই বছর বা তার বেশি সাজা হবে, তখন তিনি সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। তিনি বলেন, এর চেয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সাজা স্থগিত হয় কি না? দন্ডিত ব্যক্তিরা আপিলে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ও ৫৬১ (ক) ধারা অনুয়ায়ী একটি আবেদন করেছিলেন। সেখানে হাই কোর্ট বলেছেন, সাজা কখনো স্থগিত হয় না। অল্প কিছুদিনের জন্য স্থগিত হতে পারে। কিন্তু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দন্ড বহাল থাকবে। রায়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাই কোর্ট।

২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাই কোর্ট এই মর্মে আদেশ দেন যে, নিম্ন আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে আপিলে বিচারাধীন অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দন্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন খারিজ করে ওই আদেশ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর