সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজপথে আওয়ামী লীগ

ঢাকার প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজপথে আওয়ামী লীগ

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গতকাল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে রাজধানীতে গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল ও সতর্ক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ঢাকার প্রবেশপথ, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সতর্ক ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা। ঢাকা মহানগর থানা-ওয়ার্ডের পদপ্রত্যাশী, সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী, দলীয় কাউন্সিলররা রাজপথ দখলে রাখেন। সকাল থেকেই দলের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সমাগম বাড়ে। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দৃর্বৃত্তরা। এ খবর  ছড়িয়ে পড়ার পর দলীয় নেতা-কর্মীদের মিছিল আসতে শুরু করে।   দিনব্যাপী এসব কর্মসূচিতে তারা ‘যে হাতে পুলিশ মারে, সেই হাত ভেঙে দাও, যে হাতে সাংবাদিক পিটায়, সে হাত ভেঙে দাও, অবৈধ হরতাল মানি না, মানব না, যে হাতে গাড়ি পোড়ায়, সেই হাত পুড়িয়ে দাও, শেখ হাসিনা সংসদে আমরা আছি রাজপথে, যারা বলে হরতাল-তাদের মাথায় পানি ঢাল’-সহ নানা স্লোগান দেয়। বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, পল্টন ঘুরে জিপিও এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়। অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বর্তমান সহ-সভাপতি দিলীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, মিরাজ হোসেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, গোলাম সরোয়ার কবির, প্রচার সম্পাদক সাইফুন নবী সাগর, সদস্য শহিদুল ইসলাম মিলনসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শতাধিক নেতা। এ ছাড়া মিছিল করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ। স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলে অংশ নেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হক সাচ্চু, সহ-সভাপতি ম. আবদুর রাজ্জাক, তানভির শাকিল জয় এমপি, আবদুল আলীম বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কে এম মনোয়ার হোসেন বিপুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আনিসুজ্জামান রানা প্রমুখ। দিনব্যাপী অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করে কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের নেতৃত্বে সতর্ক অবস্থানে ও বিক্ষোভ মিছিলে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সহসভাপতি তারিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিব মোল্লা প্রমুখ। ধানমন্ডি ৩-এ দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনেও ছিল দিনভর নেতা-কর্মীর ভিড়। বিকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহানগরের নেতা নুরুল আমিন রুহুল, ডা. দিলীপ রায়, মহিউদ্দিন মহি, মিরাজ হোসেন, আকতার হোসেন, গোলাম সরোয়ার কবির, রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের অন্তর্গত সংসদীয় আসনভিত্তিক প্রতিবাদ সমাবেশ করে যুবলীগ। বেলা ১১টায় ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে ও মো. ইসমাইল হোসেনের সঞ্চালনায় এবং দুপুর ১২টায় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

উভয় স্থানে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মামুনুর রশীদ, ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. এনামুল হক খান, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন, রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, জয়দেব নন্দী, মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ। মহানগর নেতাদের মধ্যে হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদ রহমান, আরমান হক বাবু, এমদাদুল হক এমদাদ, আরিফুজ্জামান প্রমুখ। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, বিএনপি জামায়াতকে প্রতিহত করতে আওয়ামী যুবলীগই যথেষ্ট।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল হয়। বেলা ১১টায় উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির নেতৃত্বে মিরপুর-১ নম্বরে সমাবেশ হয়। মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, মাজহার আনাম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মিজানুল হক মিজু, প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের উদ্যোগে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেক খান এমপি ও থানা-ওয়ার্ডের নেতারা অংশ নেন। ঢাকা-১৮ আসনের এমপি ও মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসানের নেতৃত্বে উত্তরায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আখা খান মিন্টুর নেতৃত্বে গাবতলীতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিরপুরের মাজার রোড, পিংক সিটি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক সাবিনা আকতার তুহিন।

উত্তরার আজমপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত হরতালবিরোধী মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. খসরু চৌধুরী সিআইপির অনুসারীরা। ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঢাকা-৫ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী কামরুল হাসান রিপনের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী মিছিল যাত্রাবাড়ী থেকে শনিরআখড়া-দনিয়া এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নান, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগ নেতা সিফাত সাদেকীন চপল, কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন রহমান কাকলিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলের নেতৃত্বে ৬৬, ৬৭, ৬৮ ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার চৌরাস্তায় সমাবেশ এবং মিছিল করা হয়। ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় অবস্থান নেন নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল করে শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগ। উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাব্বির হোসেন মাসুদ, ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হাসান সোহেলসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না। প্রতিরোধ গড়ে তুলব এবং তাদের (বিএনপি-জামায়াত) চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরব। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু বক্তব্য দেন।

৫৮ দলীয় জোট : হরতাল-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে গতকাল রাজধানীর শ্যামলী হলের সামনে অবস্থান নেন ৫৮ দলীয় সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতা-কর্মীরা। জোটের মহাসচিব ডা. খন্দকার ইমদাদুল হক সেলিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করতে মাঠে থাকবে ৫৮ দলীয় জোট। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাণিজ্যিক রাজধানী বৃহত্তর চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করায় সরকারপ্রধানকে ধন্যবাদ। আরও বক্তব্য রাখেন জোটের মুখপাত্র মাওলানা আলতাফ হোসাইন মোল্লা, মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ দলিলুর রহমান, মোহাম্মদ মাইনুদ্দীন, মওলানা ওমর ফারুক কুতুবী, মাওলানা আজহারউদ্দীন,  মাওলানা নাজমুল মুন্সি, ডা. হাবিবুর রহমান।

জাসদের হরতালবিরোধী মিছিল : রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। পুরানা পল্টন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে আবার পল্টনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।

সর্বশেষ খবর