সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ভারতের সাবেক সিইসি

সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা রয়েছে ইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা রয়েছে ইসির

ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের সাবেক সিইসি ও ইসির সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। গতকাল নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)-এর নেতৃত্বে চার দেশের নির্বাচন সংস্থার সাবেক পাঁচজন প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। পরে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, ইএমএফ-এর  ব্যানারে পাঁচজন বিদেশি অতিথিসহ একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের কাছে আগেই সময় চেয়েছিল, সে অনুযায়ী এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, তাদের দেশে নির্বাচন পদ্ধতি কীভাবে কাজ করে, আমাদের নির্বাচন কমিশন কীভাবে কাজ করে সেটাই মূলত তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছে বলেন ইসি সচিব। তিনি জানান, প্রতিনিধিরা এ বৈঠকে কোনো পরামর্শ দেয়নি। বরং সংশ্লিষ্টে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মতের আদান-প্রদান হয়েছে। ইসি সচিব বলেন, এখানে শুধু তাদের প্রসিডিউর, সিস্টেম ও আমাদের নির্বাচনী প্রসিডিউর-সিস্টেমের আদান-প্রদান হয়েছে। নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কায় সেসব দেশে নির্বাচন কীভাবে হয় আমরা জানতে পেরেছি। সেখান থেকে এডাপ্টেশনের যদি সুযোগ থাকে, তাহলে কমিশন সেটা নেবে।

ভারতে ইসির দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মতো : প্রতিনিধি দলে ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কোরাইশি, মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মুয়াদ তৌফিক, শ্রীলঙ্কার আরএমএএল রথনায়েক, নেপালের নির্বাচন কমিশনার সাগুন শামসের জে বি রানা ও নেপালের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ইলা শরমাসহ ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের সাবেক সিইসি এস ওয়াই কোরাইশি মনে করেন, ভারতের নির্বাচন কমিশনের যে সব ক্ষমতা আছে, সেই সব ক্ষমতা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনেরও আছে। তিনি বলেন, একটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সব ক্ষমতা রয়েছে। তাদের ওপর কেন বিশ্বাস স্থাপন করা যাবে না তার কোনো কারণ আমি দেখি না। কোরাইশি জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে ভারতের নির্বাচন কমিশন দৃশ্যত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মতো দায়িত্ব পালন করে। ভারতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কমিশন সর্বময় ক্ষমতা পায়। নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা বাড়ে।

অংশগ্রহণমূলক ভোট চায় ইএমএফ, রাজনৈতিক মতানৈক্যে হতাশ ইসি : ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পরিচালক ও মুখপাত্র আবদুল জব্বার খান বৈঠকের বিষয়ে বলেন, ইসির কাছে প্রতিনিধিরা আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি কেমন জানান। ইসি জানিয়েছে, সার্বিকভাবে ভালো প্রস্তুতি এগোচ্ছে। আগামী নির্বাচনটি যেন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় ও প্রশ্নবিদ্ধ কোনো নির্বাচন না হয় তা নিয়ে সরকারের আন্তরিকতা রয়েছে। এটি যেন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হয়। সে ব্যাপারে যত ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন সে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার মনোভাব প্রকাশ করেছে সরকার।

নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, কার অধীনে হবে তা নিয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোয় মতানৈক্য রয়েছে। ইএমএফ মুখপাত্র বলেন, তাদেরকে দুবার সংলাপের চেষ্টা করেও ইসি সংলাপে বসতে পারেননি এবং সেই কারণে নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটু হতাশা আছে আমরা যেটি বুঝলাম। তাদের সঙ্গে ইসি যদি সংলাপে বসতে পারতেন। তাহলে হয়তো অনেক সমস্যারই সমাধান হতে পারত। নির্বাচনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি ইসির উদ্বেগ থাকলেও কমিশন সবার সহযোগিতায় তা মোকাবিলার প্রত্যাশা করছে।

ভারতের সাবেক সিইসিকে উদ্ধৃত করে ইএমএফ মুখপাত্র বলেন, ‘ভারতে কিন্তু নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন সময়ে অনেকটা কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের মতো করে কাজ করে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এখানে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।’ ইএমএফ মনে করে, দায়িত্ব সরকারেরই প্রথম, কাজেই সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে এবং সেই সংলাপের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলকে ইনক্লুড করে কীভাবে একটি সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর