শিরোনাম
সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ডিএমপি কমিশনার

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতেও এমন হামলা দেখিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, বিএনপি কর্মসূচির নামে বিচারপতির বাসভবনে হামলা, হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির হামলার এ উদাহরণকে আমরা বর্তমানে ফিলিস্তিনে গাজা উপত্যকায় যেভাবে হামলা চলছে তার সঙ্গে মেলাতে পারি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনীর হাতেও এমন হামলা আমরা দেখিনি। নিহত পুলিশ সদস্যের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল বেলা পৌনে ২টায় নিহত পুলিশ সদস্য মো. আমিরুল ইসলাম পারভেজের জানাজার নামাজ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপির হামলা গাজা উপত্যকায় হামলার মতো, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনীর হাতেও এমন হামলা আমরা দেখিনি। পুলিশ সদস্য হত্যাসহ সব ঘটনায় যোগ্য ও সুষ্ঠু বিচারের জন্য সবকিছু করছি। এই নৃশংস ঘটনার যাতে ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার হয়, এ জন্য যা কিছু করা দরকার ডিএমপির পক্ষ থেকে করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর দুজনকে শনাক্ত করেছি। গাইবান্ধা থেকে শামীম রেজা এবং ঢাকা থেকে মো. সুলতানকে গ্রেফতার করেছি। দুজনই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জানাজার নামাজের আগে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এমন নৃশংস ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত। পারভেজকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, অসম্মান করা হয়েছে এটি সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে আঘাত করা হয়েছে। এর সঙ্গে দায়ীদের উপযুক্ত ও যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, নিহত পারভেজের পরিবারের ক্ষত হয়তো পূরণীয় নয়। তবে ডিএমপি একটি পরিবার। এই পরিবারের প্রধান হিসেবে আমি পারভেজের পরিবারের পাশে থাকব। পাশাপাশি তার মেয়ের পড়ালেখা থেকে শুরু করে সব কিছুর দায়িত্ব নিচ্ছি। ডিএমপি প্রধান আরও বলেন, গতকালের (শনিবার) ঘটনাসহ বাস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ও ভাঙচুর করা হয়েছে। ১১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কারও কারও অবস্থা সংকটাপন্ন। ইতোমধ্যে খবর পেয়েছি আরও এক পুলিশ সদস্যের জীবন সংকটাপন্ন। আনুষ্ঠানিক সমাবেশের ভিতর থেকে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আমরা অনেককে খুঁজছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও একটি অনুষ্ঠানে অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। হাত পা ভাঙা হয়েছে। ক্যামেরা ভাঙা হয়েছে। হামলাকারীদের অনেকে সাংবাদিক বেশে এসেছিল। তারাও এসেছিল ব্যাগ নিয়ে। ব্যাক-প্যাকের ভিতর থেকে বের করা হয়েছে ককটেল। এই ঘটনাকে নানাভাবে দেশে-বিদেশে থেকে কল্পনাপ্রসূত অপপ্রচার করছে। তিনি বলেন, শনিবার যা ঘটেছে তা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। কেবল পুলিশ নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী নয়, পুলিশ সাংবাদিকসহ নগরবাসী মিলে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে মূলধারার গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি ।

উল্লেখ্য, জানাজার নামাজের পর পুলিশ সদস্য পারভেজের লাশ গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়েছে। এর আগে আমিরুলের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। করুণ সুরে বেজে ওঠে বিউগল।

সর্বশেষ খবর