মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গাজার ৬০০ স্থাপনায় হামলা দেখামাত্র গুলি

প্রতিদিন ডেস্ক

গাজার ৬০০ স্থাপনায় হামলা দেখামাত্র গুলি

ইসরায়েলি বাহিনী স্থল ও আকাশ থেকে রবিবার দিনগত রাতভর অবরুদ্ধ গাজার ৬ শতাধিক স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় ব্যবহার করা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু বিমান। রাতের হামলার পর গতকাল সকালের দিকে স্থলসেনাদের ট্যাংকবহর গাজা সিটির দক্ষিণ প্রান্তে ঢুকে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেয়। এই সঙ্গে স্থানীয়দের পালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের দেখামাত্র গুলি চালাতে থাকে। যদিও হামাস দাবি করেছে, পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলোকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা, পার্স টুডে

খবরে বলা হয়, তিন সপ্তাহ ধরে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার দিনগত রাতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির ৬০০ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, হামলা চালানো স্থাপনাগুলো ছিল হামাসের। এর আগের রাতে ফিলিস্তিনের ৪৫০টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের বাহিনী। আরেক খবর অনুযায়ী, গাজা সিটির দক্ষিণ প্রান্তে গতকাল সকালে ইসরায়েলি ট্যাংক ঢুকে পড়ে। সেখানে গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আছে, সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গাজা সিটির দক্ষিণ প্রান্তের শহর জায়তুনে ট্যাংক দেখা গেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তারা সালাহেদিন সড়কপথটি বন্ধ করে দিয়েছে। ওই পথ দিয়ে যে গাড়ি বা যারা যাওয়ার চষ্টা করছে, তার ওপর গুলি করা হচ্ছে। এদিকে হামাস দাবি করেছে, পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ও তাদের ট্যাংকবহরকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমানগুলো গাজা নগরীর শিফা ও আল কুদস হাসপাতালের নিকটবর্তী এলাকাগুলোয় হামলা চালিয়েছে আর দক্ষিণে খান ইউনিস শহরের পুবদিকের সীমান্ত এলাকায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।

৪৭ মসজিদ ধ্বংস ও সাত গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত : তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় ৪৭টি মসজিদ ধ্বংস ও সাতটি গির্জা ক্ষতির শিকার হয়েছে। গাজার গণমাধ্যম কার্যালয় আরও জানায়, এসব হামলায় ২০৩টি স্কুল ও ৮০টি সরকারি কার্যালয় ধ্বংস হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক সালামা মারুফ জানান, বড় আকারে বোমা হামলায় ২ লাখ ২০ হাজার বাড়ি ও ৩২ হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে।

বিশেষ বাহিনী পাঠাল কানাডা : যুক্তরাষ্ট্রের পর কানাডা এবার ইসরায়েলের জন্য বিশেষ বাহিনী পাঠিয়েছে। কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, তাদের বিশেষ বাহিনী জরুরি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও দূতাবাসের লোকজনকে সহযোগিতা করতে বর্তমানে ইসরায়েলে অবস্থান করছে। কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিল ব্লেয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, কানাডার বিশেষ ফোর্সের ৩০০ সদস্য এ অঞ্চলে অবস্থান করছে।

এর আগে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর ‘ডেলটা ফোর্স’ সামাজিক মাধ্যমে তাদের ছবি প্রকাশ করে বুঝিয়েছে তারা ইসরায়েলে অবস্থান করছে। পরে অবশ্য তারা ইনস্টাগ্রাম থেকে এ-সংক্রান্ত ছবি মুছে ফেলেছে এবং ইসরায়েলে নিজেদের উপস্থিতির খবর অস্বীকার করেছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য : রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, পশ্চিমা জোট বর্তমান সামরিক সংঘাত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি গতকাল চীনের বার্ষিক সর্ববৃহৎ সামরিক কূটনৈতিক অনুষ্ঠান ‘বেইজিং জিয়াংশান ফোরাম’-এ দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোট বৈশ্বিক নিরাপত্তার নীতি লঙ্ঘনের চেষ্টা করছে। চলমান সংঘাত পশ্চিমা এ জোটের উসকানি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সের্গেই শোইগু বলেন, যুক্ত ইউরো-আটলান্টিক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা জোট তৈরির মাধ্যমে ইদানীং পশ্চিমারা সক্রিয়ভাবে এ অঞ্চলে তাদের সামরিক বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। এর মাধ্যমে এশিয়ায় ন্যাটো সামরিক ঘাঁটির উপস্থিতিকে তারা ন্যায্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করবে।

 

সর্বশেষ খবর