মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
দুই কানাডিয়ান পুলিশের সাক্ষ্য

নাইকোর ঘুষের টাকা দেশে আসে বারবাডোজ হয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন কানাডার রয়েল মাউন্টেড পুলিশের দুই সদস্য কেভিন ডুগ্গান ও লয়েড শোয়েপ। গতকাল ঢাকায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তারা বলেন, বাংলাদেশে গ্যাসক্ষেত্রে কাজ পেতে কানাডীয় কোম্পানি নাইকো রিসোর্স লিমিটেড ঘুষ লেনদেন করেছে। ঘুষের অর্থ কানাডা থেকে বারবাডোজ হয়ে বাংলাদেশে আসে। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান তাদের সাক্ষ্য নেন। কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে সংস্থাটির প্রধান আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এর আগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ অস্থায়ী আদালতে যান কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের দুই সদস্য কেবিন ডুগ্গান ও লয়েড শোয়েপ। ১১টা ৩০ মিনিটে লয়েড শোয়েপের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রথমে সাক্ষ্য দেন লয়েড শোয়েপ। তাকে আসামিপক্ষের জেরা করা শেষ হয়। এরপর সাক্ষ্য দেন কেভিন ডুগ্গান। তাকে জেরা করা শুরু হওয়ার পর আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী জেরার জন্য আজ দিন ঠিক করেন আদালত। নিজের সাক্ষ্যে লয়েড শোয়েপ বলেন, কানাডার তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোতে তৎকালীন সরকারের কিছু কর্মকর্তা দুর্নীতি করতে ইন্ধন জোগান। আমরা এ দুর্নীতির বিষয়ে জানতে পারি গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে। নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার দায়ে নাইকো রিসোর্সেস কানাডায় দুর্নীতির দায়ে সাজপ্রাপ্তও হয়েছে। এরপর তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিতে গত শনিবার রাতে ঢাকায় আসেন কানাডিয়ান রয়েল মাউন্টেড পুলিশের এ দুই সদস্য। রবিবার তারা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে ১৯ অক্টোবর এই দুই বিদেশি সাক্ষীকে ৩০ অক্টোবর আদালতে এসে তাদের সাক্ষ্য দিতে এ সমন জারি করেন আদালত।

তার আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন এবং কানাডিয়ান রয়েল মাউন্টেড পুলিশের দুজনকে অনুমতি দেন আদালত। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের পক্ষে তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। গত ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।

 

 

সর্বশেষ খবর