ইডেনের গ্যালারিতে বসে ৪৩ বছর আগের ইডেনে মর্মন্তুদ ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন মোহাম্মদ শফি। বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলেছেন তিনি। ক্রিকেটার ছিলেন বলে গতকাল ইডেনে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দেখেন। নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি দেখতে পারেননি। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাকিবদের ম্যাচটি মিস করতে চাননি। খেলা দেখে টাইগারদের পারফরম্যান্সে হতাশ হয়ে বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কফিনে পেরেক ঠুকে দিয়েছে পাকিস্তান। আমি বুঝতে পারছি বাংলাদেশের সমর্থকদের যন্ত্রণা।’ ইডেনে খেলা বলে বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজার সমর্থক আসেন কলকাতায়। কষ্ট, বেদনা, যন্ত্রণা ও হতাশা ছাড়া আর কিছুই সঙ্গী করে নিয়ে যেতে পারেননি তারা। ১৯৮০ সালে ইস্ট বেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচে ১৬ সমর্থক মারা গিয়েছিলেন। সেদিন শোকের কালো কাপড়ে ঢাকা পড়েছিল শুধু ইডেন নয়, কলকাতা শহর। গতকাল পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর শুধু ইডেন নয়, পুরো বাংলাদেশই শোকাহত হয়েছে হারের যন্ত্রণায়! এবার বিশ্বকাপে হারের ডাবল হ্যাটট্রিক পূরণ করলেন সাকিবরা।
গতকালের ম্যাচেও ‘অসহায় আত্মসমর্পণ’- শিরোনাম করাই যায়। এর চেয়ে ভালো বিশেষণ আর খুঁজে পাওয়া গেল না অভিধানীতে। পরিচিত ইডেনে অপরিচিত সাকিব বাহিনী। নন্দনকাননে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাকিবরা যে রকম ব্যাটিং ও বোলিং করেছেন, তাতে কোনোভাবেই মনে হয়নি এটা বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ। বুঝা যায়নি জয়ের জন্য মড়িয়া টাইগাররা। প্রথম বল থেকেই খোলসে ঢুকেছিলেন টাইগাররা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবার নিয়ে টানা ষষ্ঠ ম্যাচ হেরে বিরল লজ্জার রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। এই হারে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা দূরূহ হয়ে পড়ল টাইগারদের।
টার্গেট মামুলি ২০৫ রান। ওভারপ্রতি স্ট্রাইক রেট ৪.১। সহজ টার্গেটে পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান ১২৮ রানের ভিত দেন মাত্র ২১.১ ওভারে। বাঁ হাতি ওপেনার ইমাম উল হক ব্যর্থ হলে ফখরকে পাঁচ ম্যাচ পর সুযোগ দেওয়া হয়। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন তিনি। ৭টি ছক্কা মারেন ৮১ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংসটিতে। যার একটির দূরত্ব ছিল ৯৯ মিটার। আাবদুল্লাহ শফিক পুরো টুর্নামেন্টেই দারুণ খেলছেন। হায়দরাবাদে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১১৩ রানের ইনিংস খেলে বিশ্বকাপ শুরু করেন। পরের ম্যাচগুলোতে রান করেছেন ২০, ৬৪, ৫৮, ৯ ও ৬৮। শেষ পর্যন্ত ৩২.৩ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।