বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
নির্বাচন কমিশনে পিটার হাস

শর্তহীন সংলাপের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়, নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইসির হাতে অন্য কোনো অপশন নেই। এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কোনো পক্ষের সংঘাতের জায়গা নেই। তিনি আশা করেন বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রশমন এবং একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজতে সব পক্ষ শর্তহীন সংলাপে বসবে।

গতকাল নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে দেখা করতে যান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। পরে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সিইসি ও পিটার হাস আলাদা আলাদাভাবে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেছেন, ভোটে অংশ নেবে কি নেবে না রাজনৈতিক দলগুলোর অপশন আছে, কিন্তু ইসির এ ধরনের কোনো অপশন নেই। প্রতিকূল হলেও নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই নির্বাচন হবে। সিইসি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। তিনি আগেও কয়েকবার এসেছিলেন। অনেকটাই সৌজন্য ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ইসির কাছে প্রিপারেশন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, কমিশন জানিয়েছে। অবশ্য নিজেও অবহিত আছেন। উনি এনভায়রনমেন্টাল এসে করতে চাচ্ছেন কেমন পরিস্থিতি। আমাদের তরফ থেকে স্পষ্ট করে বলেছি যে, ইসির হাতে কিন্তু কোনো অপশন নেই। ইসিকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে হবে। সিইসি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন অপশন থাকে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, অংশগ্রহণ না-ও করতে পারে। ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, পাঁচটি আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। দলগুলো এককভাবে ৩০০ আসনে কনটেস্ট করতে পারে বা অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে অংশ নিতে পারে। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও সিইসি বলেছেন, ‘বিভিন্ন ধরনের অপশন ওপেন রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের জন্য ওই ধরনের কোনো অপশন ওপেন নেই। কাজেই আমরা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য।’ পরিস্থিতি অনুকূল বা প্রতিকূলের বিষয়টি অর্থবহ জানিয়ে সিইসি জানান, অনুকূল হোক, প্রকিকূল হোক- ইসির প্রত্যাশা সব সময় যত বেশি অনুকূল হবে ইসির জন্য তত সহজ হবে। সিইসি বলেন, ‘আমরা এখনো প্রত্যাশা করব ও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা করি- সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু প্রতিকূল হলে নির্বাচন করা হবে না- এ ধরনের মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং যেন জনগণের মধ্যে না থাকে সে জন্য স্পস্ট করে বলতে চাই- নির্বাচন নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সে ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’

রাষ্ট্রদূতও বৈঠকে সংলাপের তাগিদ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘উনি বলেছেন, আমরাও সব সময় বলে এসেছি- রাস্তায় শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সলিউশন হবে বলে আমি বা আমরা মনে করি না। উনিও বলেছেন, বিশ্বাস করেন- দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, দ্য শড বি ডায়ালগ এমাং দি পলিটিক্যাল পার্টিস রাউন্ড দ্য টেবল উইথ কাপস অব টি। উনি এখনো আহ্বান করবেন সবাইকে সংলাপের মাধ্যমে বিরাজমান মতভেদ, মতানৈক্য নিরসন করার জন্য।’

সব পক্ষ শর্তহীন সংলাপে বসবে, পিটার হাসের আশাবাদ : ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কোনো পক্ষের সংঘাতের জায়গা নেই। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রশমন এবং একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজতে সব পক্ষ শর্তহীন সংলাপে বসবে। সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনকালে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়া ভোট গ্রহণের বেশ আগে থেকেই শুরু হয়। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সরকার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোটার, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব রয়েছে। পিটার হাস আরও বলেন, সহিংসতা, জনগণের জমায়েত ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার বাধাগ্রস্ত করা, ইন্টারনেট অ্যাকসেস (অভিগম্যতা) বাধাগ্রস্ত করাসহ গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে অবমূল্যায়ন করে- এমন যে কোনো কাজ সুষ্ঠু নির্বাচনের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

সর্বশেষ খবর