সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আজ জাতিসংঘ পরিষদে শুনানি

শক্তিশালী ইসি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা বলেছে সরকার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইউনিভার্সাল পিরিউডিক রিভিউ (ইউপিআর) বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির আওতায় চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচিত হবে। আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এ পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ইউপিআর সভায় অংশ নিতে জেনেভায় রয়েছে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রতি চার বছর পরপর ইউনিভার্সাল পিরিউডিক রিভিউ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধারাবাহিকভাবে চতুর্থবার ইউপিআর প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এর আগে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে প্রথমবার, ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৮ সালে তৃতীয়বার ইউপিআরে অংশ নিয়েছিল। জানা যায়, মূলত তিনটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইউনিভার্সাল পিরিউডিক রিভিউতে। এগুলো হলো- সরকারের দেওয়া জাতীয় প্রতিবেদন; জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বা সংগঠনের জোটগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয়ের প্রতিবেদন। এ পর্যালোচনা উপলক্ষে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। আজ পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তাঁর প্রতিনিধিদের নিয়ে বিগত চার বছরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরাসহ এ সম্পর্কে উত্থাপিতব্য বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে মৃত্যু, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী ও বিক্ষোভকারীদের নির্বিচারে গ্রেফতারের বিষয়ে আলোচনা উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের সনদ অনুসারে শ্রম অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, লিঙ্গ সমতা এবং মানব পাচারের বিষয়গুলোও স্থান পাবে।

সরকারের রিপোর্টে শক্তিশালী ইসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথা : বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে রিপোর্ট পেশ করেছে সরকার। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে তাদের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। রিপোর্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য আইন ভঙ্গ করে শক্তি প্রয়োগ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। ২০১৫ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১৭০০ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন প্রতিরোধে ২০০৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে দুদক জেলা পর্যায়ের অফিসের মাধ্যমে নিজেই দুর্নীতির মামলা দায়ের করতে পারে। এতে দুর্নীতি দমন কমিশন আগের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা লাভ করছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপব্যবহার রোধ করতে এ আইনের কিছু ধারা সংশোধন করে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর