সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতের মনোভাবের পর নীতি পর্যালোচনা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

ভারতের মনোভাবের পর নীতি পর্যালোচনা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী

বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর মতে, আমি মনে করি ভারতের মনোভাব জানার পর যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাংলাদেশ নীতি পুনরায় পর্যালোচনা করতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।

পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গভীর বোঝাপড়া রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের আলোচনায় আঞ্চলিক বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ নীতি স্পষ্ট ভাষায় সফররত দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে জানানো অত্যন্ত জরুরি ছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের মুখে। তিনি বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় তখন থেকেই বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক নিবিড়। ফলে তাদের বিএনপি সম্পর্কে নমনীয় মনোভাব দেখানো সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, শেখ হাসিনা সরকার মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বাংলাদেশের নিজস্ব মূল্যায়ন রয়েছে। আমেরিকা যে ভিসানীতি আরোপ করেছে সেটা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তবে এটা শুধু শাসকদলের জন্য প্রযোজ্য ব্যাপারটা এমন নয়, সব রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটা সবারই মেনে নেওয়া উচিত। নির্বাচন বয়কট করলে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। এটাও ঠিক কেবল বিএনপি নয়, আমেরিকা জামায়াতে ইসলামীকেও রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে দেখতে চায়। এক্ষেত্রে বর্তমান বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার। বাইরের কোনো দেশ তাদের সিদ্ধান্ত সার্বভৌম দেশের ওপরে চাপিয়ে দিতে পারে না। পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ওপর নানাভাবে যে চাপ তৈরি করছে তার সম্ভবত একটাই- ভূ-রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে। তার সঙ্গে কতটা মানবাধিকার বা গণতন্ত্রের প্রশ্ন জড়িত তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। আমেরিকা প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের প্রভাব কোনোভাবেই বাংলাদেশে বাড়ুক সেটা চাইবে না। যদিও এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার কিছুটা হলেও সহমত রয়েছে। সে কারণে ভারত বোঝানোর চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের ওপর এমন চাপ তৈরি না করা উচিত, যাতে বাংলাদেশ বাধ্য হয় ভিন্ন শিবিরে যোগ দিতে, যেটা আমেরিকার সঙ্গে ভারতেরও উদ্বেগের বিষয় হবে। বর্ষীয়ান এই কূটনীতিক বলেন, একটা সময়ে বাংলাদেশে ট্রানজিট নিয়ে আপত্তি ছিল। কিন্তু কূটনৈতিক প্রয়াসে কানেকটিভিটি এখন বেড়েছে। সেটা উভয় দেশের পক্ষে উইন উইন পরিস্থিতি। উভয়েই লাভবান হচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতা ভারত চায়। সেটাই আমেরিকাকে বলা হয়েছে। ভারত এ মুহূর্তে কোনোভাবেই বাংলাদেশে অশান্তি হোক সেটা চাইবে না। এটাই আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে বোঝানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাংলাদেশ নীতি পুনরায় পর্যালোচনা করুক এটাই আমরা চাই।

সর্বশেষ খবর