মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
খুলনায় জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা

নৌকা দেবে স্মার্ট দেশ

♦ বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় ♦ মানুষকে পোড়ানোর চেষ্টা করলে ওই হাত পুড়িয়ে দেবেন ♦ আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া আর কে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছে, কারা উসকানি দিচ্ছে খুঁজে বের করা উচিত

রফিকুল ইসলাম রনি ও সামছুজ্জামান শাহীন খুলনা থেকে

নৌকা দেবে স্মার্ট দেশ

খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে গতকাল জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -পিআইডি

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকা স্বাধীনতা দিয়েছে, নৌকা উন্নয়ন দিয়েছে। নৌকাই দেবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ। গতকাল বিকালে খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসমুদ্রে তিনি এসব কথা বলেন। সার্কিট হাউস ময়দান    ছাড়িয়ে গতকাল গোটা খুলনা মহানগরী জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। আরও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম। এ কাজগুলো যেন সমাপ্ত করতে পারি সেজন্য সুযোগ চাই। তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, আজকের উপস্থিতিই প্রমাণ করে আপনারা আমাকে কত ভালোবাসেন। এই জনসমুদ্রে যাদের দেখতে পাচ্ছি এবং আশপাশে যারা আছেন, যাদের দেখতে পাচ্ছি না তারাও আমার হৃদয়ে আছেন। আপনাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

বারবার ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এজন্যই এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আজকের বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশ। তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট সরকার হবে, স্মার্ট অর্থনীতি হবে, স্মার্ট সমাজ হবে। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করে বাংলাদেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা তৈরি করব। শেখ হাসিনা বলেন, বারবার আপনাদের সেবা পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার চাওয়ার কিছু নেই। মা-বাবা সব হারিয়েছি। তবুও আমি ফিরে এসেছি। তিনি বলেন, যে মানুষগুলোর ভাগ্য গড়ার জন্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন, আমি তাদের ভাগ্য গড়তে চাই। ক্ষুধা দারিদ্র্য দূর করে উন্নত জীবন দিতে চাই। দেশের মানুষ ভালো থাকলে সেটাই আমার পাওয়া। বিকাল ৩টা ১৯ মিনিটে জনসভা মঞ্চে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতেই তিনি ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও পাঁচটি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে তিনি বক্তৃতা শুরু করেন।

বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় : বিএনপিকে নেতৃত্বহীন দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময়ে একটা বিষয় নজরে রাখতে হবে। বিএনপি জামায়াত ২০০৮ সালেই ৩০টি সিট পেয়েছে। তারা জানে যে, তাদের নেতা নেই। মুণ্ডুহীন একটা দল। একটা পলাতক আসামি, একটা কারাগারের আসামি। সেই দল এই দেশের নির্বাচন হতে দিতে চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।

মানুষকে পোড়ানোর চেষ্টা করলে ওই হাত পুড়িয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে- কেউ যদি ওই গাড়ি আর মানুষকে আগুনে পোড়াতে চেষ্টা করে ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন। যেন আর কেউ সাহস না পায় এভাবে মানুষের ক্ষতি করতে। এ সময় জনগণের জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশে থেকে সহযোগিতা করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেখেছি সেই পোড়া মানুষগুলো দুরবস্থা। চোখে পানি রাখা যায় না। ওদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ নেই। কীভাবে পুলিশকে হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। ওই ধরনের ঘটনা যাতে আর ঘটাতে না পারে, সেজন্য প্রতিটি এলাকায় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মানুষের নিরাপত্তা দেবেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আপনারা নিরাপত্তা দেবেন।

বিএনপি সন্ত্রাসী দল তাদের কোনো মনুষ্যত্ব নেই : প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কাজ হলো আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা। ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে। ৪৫ জন পুলিশকে আহত করেছে। রাজারবাগে হাসপাতালে হামলা করেছে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। রোগীদের ওপর হামলা করেছে। এদের মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব নেই। অন্তঃসত্ত্বাসহ অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে, যা তারা শুরু করেছিল অতীতে। নির্বাচন বন্ধ করতে তখন হাজার হাজার স্কুল পুড়িয়েছিল, সরকারি-বেসরকারি অফিস পুড়িয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন বন্ধ করতে পারেনি। জনগণ বাধা দিয়েছে। তারা সফল হয়নি।

বিএনপি ইসরায়েলের কাজ থেকে মনে হয় শিক্ষা নিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সন্ত্রাসী দল বিএনপি-জামায়াত জোট তারা মানুষের জন্য কাজ করে না। একজন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে কারাগারে। আর একজন মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবে না বলে লন্ডনে বসে দুর্নীতির টাকা দিয়ে চলছে। আর এখানে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যেমন বর্বর হাসপাতালে হামলা করেছে, বিএনপিও একই কায়দায় হাসপাতালে হামলা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে, তেমনি বিএনপিও একই কাজ করছে। বিএনপি ইসরায়েলের কাছ থেকে মনে হয় শিক্ষা নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া আর কে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছে : আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া আর কোন সরকার শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখি গার্মেন্ট শ্রমিকরা আন্দোলন করে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি মজুরি ছিল মাত্র ৮০০ টাকা। আমি সেটা বাড়িয়ে ১৬০০ টাকা করেছিলাম। বিএনপি ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে তো এক টাকাও বাড়ায়নি। জিয়া-এরশাদও বাড়ায়নি। সেটুকু বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রথমবার ৮০০ থেকে ১৬০০। দ্বিতীয়বার সরকারে এসে ১৬০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা বাড়িয়েছিলাম। এরপর আবার তৃতীয় দফায় ৫ হাজার ৩০০ টাকা করেছিলাম। এরপর ৮ হাজার ২০০ টাকা করেছিলাম। এবার তা বৃদ্ধি করে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

আন্দোলনে কারা উসকানি দিচ্ছে খুঁজে বের করা উচিত : শেখ হাসিনা আরও বলেন, এটা বেসরকারি খাত, তবুও মালিকদের বলে, অনুরোধ করে, বুঝিয়ে শ্রমিকদের মজুরি আমরা বৃদ্ধি করেছি। সরকারি কর্মচারীদের বেতন মাত্র ৫ ভাগ বাড়িয়েছি। আর গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন ৫৬ ভাগ বাড়িয়েছি। তাহলে তাদের আপত্তি কোথায়। আন্দোলনকারীদের কারা উসকানি দিচ্ছে এদের খুঁজে বের করা উচিত। তিনি বলেন, ১৯টা শিল্প কলকারখানা তারা ভেঙেছে, এই ধ্বংস কারা করছে। সেটাই খুঁজে বের করা দরকার এবং দেখা দরকার।

কমিউনিটি ক্লিনিক খালেদা জিয়া বন্ধ করেছিল : দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাধ্যমে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, ১০ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে। ২ কোটি ৬২ লাখ কৃষক উপকার পাচ্ছে। তারা অল্প টাকায় সার কিনতে পারছে, কৃষি উপকরণ কিনতে পারছে। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে ’৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে মা ও শিশুরাই বেশি লাভবান হচ্ছে। ২০০১ সালে এসে খালেদা জিয়া তা বন্ধ করেছিল।

খুলনাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার : খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। আজ যা উদ্বোধন করলাম তা আপনাদের জন্য উপহার। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ও মধুমতী সেতু নির্মাণের ফলে আঞ্চলিক সুবিধা খুলনাবাসী পাচ্ছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এতে যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ হয়েছে। খুলনা মোংলা রেলপথ কাজ শুরু হয়েছে। খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলরাইন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উদ্বোধন করে দিয়েছি। আমরা একটা এক্সপ্রেসওয়ে ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ নামে করছি, যাতে যাতায়াত সহজ হয়। নদী ভাঙনে খুলনা বিভাগের জেলাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সময়মতো ড্রেজার ও নদী ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নির্বাচনের আগে বিএনপি বিভিন্ন ওয়াদা দিলেও তা পূরণ করে না উল্লেখ করে সেটি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ওদের চরিত্র বদলাবে না। নির্বাচনের আগে অনেক ওয়াদা করে যায়। এই খুলনা থেকে খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘ক্ষমতায় গেলে শিল্প কারখানা চালু করবে’। উল্টো সব বন্ধ করেছিল। এটাই হচ্ছে তাদের চরিত্র।

কাঁদলেন, কাঁদালেন শেখ হেলাল : বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন দেশের বিভিন্ন বিভাগে ও জেলায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে নেপথ্যে থেকে ভূমিকা রাখলেও বক্তৃতা দিতে দেখা যায়নি। অনেকদিন পর সোমবার নিজ এলাকায় তাকে বক্তৃতা রাখতে দেখা যায়। বক্তৃতাকালে ১৫ আগস্টে ঘাতকের আঘাতে তাঁর চাচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার বাবা শেখ আবু নাসেরসহ পরিবার ও স্বজনদের স্মরণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান। পুরো সময়জুড়ে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তৃতা করেন। তাঁর এমন আবেগ জড়িত বক্তব্যে সমবেতদের মধ্যে অনেককে চোখ মুছতে দেখা যায়।

শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘২০০১ সালে বেগম জিয়া খুলনা থেকে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর একদিনও খুলনায় আসেননি। উনি অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের পরামর্শে মোংলা পোর্ট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এই পোর্টের ওপর খুলনা-বাগেরহাটের মানুষের আয় নির্ভরশীল ছিল। এক দিনে ৩ লাখ মানুষ বেকার হয়ে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি এশতেহার ছিল ক্ষমতায় আসলে মোংলা পোর্ট চালু করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোংলা পোর্ট চালু করেছেন। এ অঞ্চলের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু করে দিয়েছেন। আমরা তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই। খুলনার মানুষের সঙ্গে শেখ হাসিনার আত্মার সম্পর্ক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন মোংলা পোর্ট ভরাট হয়ে গেছে বন্ধ করে দাও। আর এখন শেখ হাসিনা সেই পোর্ট চালু করেছেন। দেশের ৪০ ভাগ আমদানিকৃত মালামাল খালাস হয় এই বন্দরে। অর্থনৈতিক অবস্থা ফিরে পেয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। শেখ হেলাল আরও বলেন, আগে ঢাকায় যেতে ১২-১৪ ঘণ্টা সময় লাগত। এখন কৃষক মৎস্যজীবীরা উৎপাদিত ফসল নিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করে ফিরে আসছেন।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার মো. আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, শেখ সারহান নাসের তন্ময়, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মাশরাফি বিন মর্তুজা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, জলবায়ু, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নির্মল চ্যাটার্জি, আমিরুল ইসলাম মিলন, পারভিন জামান কল্পনা, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্না, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র, সংসদ সদস্য সালাম মুর্শিদী, সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বাবু, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।

জনসভা পরিণত হয় জনসমুদ্রে : প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় খুলনা। নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা হয় জনসভা মঞ্চ। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন নেতা-কর্মীরা। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’,- এমন স্লোগানে স্লোগানে খুলনা মহানগর মুখরিত হয়। পদ্মা সেতু চালু, খুলনা-মোংলা রেললাইনের উদ্বোধন ও মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পথে পথে স্লোগান দেন নেতা-কর্মীরা। খুলনার বিশাল সমাবেশের সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বাস করেন সাধারণ মানুষও। সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন সমাবেশস্থলে। দুপুরের আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। অসংখ্য নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেয় মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। সার্কিট হাউস মাঠমুখী সব কটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখনো খুলনার বিভিন্ন উপজেলাসহ যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ থেকে অসংখ্য নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগের বিভাগীয় জনসমাবেশে যোগ দিয়ে খুলনায় প্রবেশ করছেন। দুপুর ২টার পরই সমাবেশের ভিড় ছড়িয়ে পড়ে পাওয়ার হাউস মোড়, ফেরিঘাট, ডাকবাংলো, পিকচার প্যালেস, থানার মোড়সহ আশপাশে দুই কিলোমিটার এলাকায়। সমাবেশস্থল থেকে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শোনার জন্য মাঠ ছাড়াও কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ী মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড় ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হয়। সমাবেশস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরের শিববাড়ী মোড়, সঙ্গীতা সিনেমা হল মোড়, শহীদ হাদিস পার্কসহ নগরীর ২৮টি স্থানে এলইডি মনিটরে (জায়ান্ট স্ক্রিন) প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সরাসরি দেখানো হয়। নেতা-কর্মীদের ভিড় ঠেলে যারা জনসভাস্থলে যেতে পারেননি তারা সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে এলইডি মনিটরে জনসভার কার্যক্রম দেখেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর