বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজধানীতে ২০০ ভরি সোনা লুটে তিন পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীর ২০০ ভরি সোনা লুটের ঘটনায় পুলিশের তিন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন পুলিশের এএসআই। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই এএসআইসহ পুলিশের আরও এক এসআই ও এক এএসআইয়ের নেতৃত্বে সোনা লুটের ঘটনাটি ঘটেছে।

লুটের এ ঘটনা ঘটে গত ১৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ দত্ত জানান, টঙ্গী বাজারের সোনালী মার্কেটে তার শিল্পী জুয়েলার্স নামে একটি দোকান রয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর দোকানের ২০০ ভরি সোনা (প্রায় ২ কোটি টাকা দাম) তিনি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে নিয়ে গলিয়ে আনেন। শরীর ভালো না থাকায় সোনাগুলো তিনি উত্তরার বাসায় নিয়ে যান। পরদিন ভোরে ওই সোনা নিয়ে তার ভায়রার ছেলে অনিক ঘোষের (২৫) দোকানের উদ্দেশ্যে বের হন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউছুল আজম এভিনিউয়ের ৫০ নম্বর বাড়ির সামনে পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস তার সামনে দাঁড়ায়। মাইক্রো থেকে চারজন নেমে ডিবি পরিচয়ে অনিককে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলে নেন। পরে তার কাছ থেকে ২০০ ভরি সোনা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মেট্রোরেলের উত্তরা স্টেশনের কাছে ফেলে যান।

এ ঘটনার তদন্তে নেমে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত একজনের অবস্থান গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় শনাক্ত করে। পরে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় ২৪ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি শ্রীপুর থানায় এএসআই হিসেবে কর্মরত। এ ঘটনায় গ্রেফতার অপর পাঁচজন হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন (লিটন), গোলাম সারোয়ার (৪৯), আনিস মোল্লা (৩০), সুজন চন্দ্র দাস (২৯) ও আমির।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই গিয়াস উদ্দিন স্বীকার করেন ডাকাতির সোনা বিক্রির ৩৭ লাখ টাকা তিনি ভাগে পান। এর মধ্যে ২ লাখ টাকা তিনি খরচ করে ফেলেন।

বাকি টাকা তার বাড়িতে আছে। এরপর পুলিশ গিয়াসের কুমিল্লার বুড়িচংয়ের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩৫ লাখ টাকা জব্দ করে।

পুলিশের তথ্যমতে, রাজবাড়ী জেলায় জাহাঙ্গীর হোসেনের গ্রামের বাড়ি থেকে লুট হওয়া সোনা বিক্রির আরও ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি চাঁদপুর থেকে জব্দ করা হয়। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর মুগদা থেকে গোলাম সারোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। গোলাম সারোয়ারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে সুজন চন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়।

সর্বশেষ খবর