মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ পণ্যবাহী নৌযান চলাচল উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ প্রটোকলের আওতায় চালু হলো বহুল কাক্সিক্ষত রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ পোর্ট অব কল এবং সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌপথে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। পদ্মা ও মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ অংশে গতকাল বেলা ১১টায় সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর এবং ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া নৌবন্দর পর্যন্ত পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। উদ্বোধন শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। আমরা ভারতীয় মুদ্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারব। এতে দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে এখন সড়কপথের পাশাপাশি রেল, বিমান ও নৌপথ যোগাযোগ আছে। যা একটি অঞ্চলের অর্থনীতির সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই নৌপথটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করল।’ তিনি বলেন, ‘সুলতানগঞ্জ-মায়া প্রটোকল রুটটি ঢাকার আরিচা পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে ড্রেজিং প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পর এ রুটটি চালু হলো। এটি পুরো বাংলাদেশের জন্য মাহেন্দ্রক্ষণ।’ নৌবন্দর উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশের আয়োজন করে বিআইডব্লিউটিএ। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবদুল ওদুদ, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তার বক্তব্যে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সংযোগের অংশ এবং দুই দেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের একটি দৃশ্যমান প্রতীক হচ্ছে নতুন এই নদীপথ। এই রুটটি চালুর ফলে শুধু সীমান্তের দুই পাশের স্থানীয় অর্থনীতিই নয়; বরং জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে। তিনি বলেন, ভারত আজ এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। উন্নত যোগাযোগ সংযোগ এবং ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্যের মতো নতুন পদক্ষেপ ভারতে বাংলাদেশি রপ্তানিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিপা) জন্য শিগগিরই আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। এদিকে কলকাতা প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলার মায়া অভ্যন্তরীণ শুল্ক বন্দর থেকে বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ বন্দরের মধ্যে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল উদ্বোধন করেন ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সচিব (বাণিজ্য) মহম্মদ শামসুল আরিফ, ভারতীয় আন্তদেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষের (আইডব্লিউএআই) চেয়ারম্যান বিজয় কুমার, আইডব্লিউএআইয়ের হাইড্রোগ্রাফি চিফ ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র কুমার প্রমুখ। ট্রায়াল রানের প্রথম দিনই মায়া বন্দর থেকে পণ্যবাহী নৌযান করে পাথর রওনা দেয় বাংলাদেশের উদ্দেশে। প্রতি বছরে বার্ষিক ২.৬ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন করা যাবে বলে আশাবাদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এই করিডোর নতুন দিশা দেখাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর