শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

টেকনাফ সীমান্তে ফের মর্টার, গুলির শব্দ

ওপারে শত শত রোহিঙ্গার অপেক্ষা সতর্ক বিজিবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

টেকনাফ সীমান্তে ফের মর্টার, গুলির শব্দ

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের নাফ নদের ওপার মিয়ানমারে আবারও মর্টার শেল ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী সীমান্তে মিয়ানমারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পান সীমান্তের বাসিন্দারা।

অন্যদিকে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্ট, সাবরাং ও উনচিপ্রাং এবং উখিয়ার আনজিমানপাড়া এলাকা সীমান্তের ওপারে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জওয়ানরা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে খারাংখালী সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। যার ফলে সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ির ঘেরে থাকা লোকজন ভয়ে পালিয়ে এসেছে। তবে আগের তুলনায় গোলাগুলির শব্দ অনেকটা কমে গেছে।

হোয়াইক্যংয়ে বেড়িবাঁধের কাছাকাছি চিংড়ি ঘেরে বসবাসকারী নুরুল আলম (৬৮) বলেন, গত রাত থেকে মিয়ানমারের ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে কয়েকবার গোলার বিকট আওয়াজ পেয়ে পার্শ্ববর্তী বিজিবি চৌকির কাছাকাছি দৌড়ে আসি। এই সীমান্তের ওপারে এখনো যুদ্ধ চলমান রয়েছে। আমরা ভয়ে আছি। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, এখনো খারাংখালী সীমান্তে নাফ নদের ওপারে গুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় সীমান্তের বাসিন্দারা। গত রাত এবং শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে এপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন। ওপারে চলমান জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ায় অনুপ্রবেশেরের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। ফলে সীমান্তে বিজিবি ও নাফ নদে কোস্টগার্ড সদস্যরা টহল অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাখাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজ জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা এরই মধ্যে দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। শিগগিরই রাজ্যটি জান্তা বাহিনী থেকে মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যরা খুব শিগগিরই আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করবেন। জান্তা সেনাদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। রাজ্যটিতে জান্তাদের সব ক্যাম্প দখল করতে আর মাত্র কয়েক দিন লাগবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চার আরসা সদস্য গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার : কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতার উদ্দেশ্যে মজুত করে রাখা অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেডসহ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জামতলি রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এর ব্লক-ই/৫ এ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. আমির জাফর। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি ওয়ান শুটারগান, একটি এলজি, ৩৬ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, আট রাউন্ড গুলির খোসা, চার রাউন্ড শটগানের কার্তুজ, তিনটি হাতে তৈরি গ্রেনেড, তিনটি বড় পটকা, একটি ওয়াকিটকি সেট, দুটি বড় ছোরা, একটি গুলতি এবং দুটি লোহার শিকল উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার আরসা সদস্যরা হলেন- মোহাম্মেদ আমিন (২৩), পেটান শরীফ (৪৩), আবুল কাশেম (৩৩) এবং সৈয়দুর রহমান (২৫)।

সর্বশেষ খবর