শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নতুন করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের দুই বছর পূর্তি সামনে রেখে এবং অ্যাকটিভিস্ট অ্যালেক্সি নাভালনির কারাগারে মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া হিসেবে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করা হয়েছে। ৫০০টিরও বেশি নতুন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার রপ্তানি হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে ওয়াশিংটন। রাশিয়ার জ্বালানি বিক্রি থেকে আয় কমাতে এর আগেও শত শত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। তবে এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। খবর আলজাজিরা

আলজাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। নতুন করে লক্ষ্য করা হচ্ছে রাশিয়ার ব্যবসায়ীদের। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ভিটিবি ব্যাংকের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। এটি রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক। বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করবে যেন পুতিনকে আরও বেশি মূল্য দিতে হয়।

রাশিয়াকে বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে গত দুই বছরে দেশটির বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। ১২ হাজারেরও বেশি নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করতে এবং ইউক্রেনে দেশটির যুদ্ধ করার সক্ষমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখবে বলে আশা ছিল তাদের। তবে এসব নিষেধাজ্ঞা কতটা কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী অর্থমন্ত্রী ওয়ালি আডিয়েমো জানিয়েছেন, রাশিয়া তার চাহিদামতো অন্য দেশগুলো থেকে যেসব পণ্য আহরণ করে এসব নিষেধাজ্ঞার ফলে তাতে বাধা সৃষ্টি হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করাতে চায় ওয়াশিংটন। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে পরবর্তী দুই বছর ধরে চলা ইউক্রেনের যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও দেশটির বহু শহর ধ্বংস হয়।

এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্যও। যুক্তরাজ্য বলেছে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অস্ত্রভান্ডার ও যুদ্ধ তহবিল খর্ব করতে চাইছে। যুক্তরাজ্য-ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার আওতায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রুশ অর্থনীতিকে সীমিতকরণের লক্ষ্যে সমন্বিত পশ্চিমা প্রচেষ্টার অংশ এই নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক চাপের (নিষেধাজ্ঞা) অর্থ হলো রাশিয়া এই অবৈধ আগ্রাসন চালিয়ে নিতে সক্ষম হবে না। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বুধবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে জোটের নিজস্ব নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ অনুমোদন দেয়। ইইউর প্যাকেজে অস্ত্র সংগ্রহে মস্কোকে সহায়তা বা ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ২০০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি রয়েছে। যুক্তরাজ্য-ঘোষিত প্যাকেজে রাশিয়ার গোলাবারুদ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে নিশানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া ধাতু, হীরা ও জ্বালানি শিল্পে রাজস্বের উৎসগুলোকে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া।

সর্বশেষ খবর