বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

দ্বৈত কর পরিহারে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে নয়া চুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে বিদ্যমান দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তিতে ৩৩টি আর্টিকেল রয়েছে। নতুন চুক্তিতে শুধু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে করমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। নতুন আর্টিকেল অন্তর্ভুক্ত করার ফলে সার্ভিস তথা সেবার বিপরীতে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হারে কর আহরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

গতকাল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং নেদারলান্ডসের পক্ষে দেশটির মিনিস্ট্রি ফর ট্যাক্স অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড দ্য ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এমএলএ ভ্যান রিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন। এ সময় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ চিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের ১৫টি সহযোগী দেশের মধ্যে অন্যতম। নেদারল্যান্ডস ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের নবম রপ্তানিকারক বৃহত্তর অংশীদারি দেশ, যার রপ্তানিমূল্য ইউএস ডলার ২ হাজার মিলিয়নের অধিক। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডসের স্থান চতুর্থ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশে ২৫৬০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের অধিক বিনিয়োগ করেছে। জ্বালানি, বাণিজ্য, চামড়া খাত, চামড়াজাত পণ্যসামগ্রী, সিমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে দ্বৈত কর আরোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তি প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই সই হয়। এরই মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক রীতি-নীতিতে নানাবিধ পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সই হওয়া দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত চুক্তিগুলোর অসামঞ্জস্যতা দূর করতে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে চুক্তিগুলো সংশোধনের প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে ইতিপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি সংশোধন করে নতুন চুক্তি সম্পাদন করা হয়। চুক্তিতে শেয়ার হস্তান্তর বাবদ অর্জিত মূলধনী মুনাফা বাংলাদেশে করযোগ্য হওয়ার শর্ত নতুন চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে সোর্স দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে অর্জিত মূলধনী লাভ থেকে কর আহরণ করা সম্ভব হবে। বিদ্যমান চুক্তির কোনো আর্টিকেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন কোনো আয় করদাতা যে দেশের নিবাসী সে দেশে কর আরোপ করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে নতুন চুক্তিতে এটি সংশোধন করে যে দেশে এমন আয় উদ্ভুত হবে, সে দেশে কর আরোপ করার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কর দাবি আদায়ে সহযোগিতার নিমিত্ত এই আর্টিকেলটি নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনকারী উভয় রাষ্ট্র রাজস্ব আদায়ে একে অপরকে সহযোগিতা করার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর